বাংলাদেশের অজানা ৩০টি পর্যটন/ভ্রমণ স্থানসমূহ-- নতুন রোমাঞ্চের সন্ধানে

বাংলাদেশের অজানা ৩০টি পর্যটন/ভ্রমণ  স্থানসমূহ

🧭বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য অজানা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পর্যটন স্থান। এই আর্টিকেলে জানুন অজানা ৩০টি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে, যেখানে আপনি ভ্রমণ করে পাবেন অনন্য অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের অজানা ও কম পরিচিত ৩০টি ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে জানুন বিস্তারিতভাবে। যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস এবং রোমাঞ্চে ভরপুর অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।

আমরা এখন বাংলাদেশে অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান সমূহ নিয়ে আলোচনা করব। কিছু নামকরা দর্শনীয় স্থান সবাই ভ্রমণ করে কিন্তু অজানা বিষয়গুলি নিয়ে কেউ চিন্তা করে না। আমরা আজকের এই প্রবন্ধে সেই চিন্তার দ্বার উন্মুক্ত করে দিব। আপনারা আমাদের সাথে থাকুন এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পাঠ করুন তাহলে বাংলাদেশের অনেক অজানা বিষয় পর্যটন ও ভ্রমণ বিষয়ে জানতে পারবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

পেজ সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের অজানা ৩০টি পর্যটন/ভ্রমণ  স্থানসমূহ-- নতুন রোমাঞ্চের সন্ধানে

বাংলাদেশের অজানা ৩০টি পর্যটন/ভ্রমণ  স্থানসমূহ-- নতুন রোমাঞ্চের সন্ধানে
বাংলাদেশের পূর্ববঙ্গের  অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান
বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান
বাংলাদেশের  দক্ষিণবঙ্গের অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান
কেন যাবেন এই অজানা স্থানগুলোতে
লেখকের শেষ বক্তব্য

🏞️বাংলাদেশের অজানা ৩০টি পর্যটন/ভ্রমণ  স্থানসমূহ-- নতুন রোমাঞ্চের সন্ধানে

বাংলাদেশ শুধু কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন বা সুন্দরবন দিয়েই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে এমন অনেক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের পর্যটন স্থান, যেগুলো আজও অনেকের অজানা। আজকের আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরছি বাংলাদেশের এমন ৩০টি কম পরিচিত কিন্তু মনোমুগ্ধকর ভ্রমণস্থান।

ভ্রমণ মানেই নতুন কিছু দেখা, জানা এবং অনুভব করা। বাংলাদেশে প্রচুর জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র থাকলেও, আজও অনেক স্থান রয়েছে যেগুলো এখনও মানুষের নজর এড়িয়ে গেছে। এসব স্থান যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর, তেমনি ইতিহাস, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিরও বাহক। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো বাংলাদেশের সেই অজানা কিংবা কম পরিচিত ১৫টি ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে, যেখানে আপনি পাবেন প্রকৃতির অনন্য রূপ ও প্রশান্তি।

📍 ১. রেমাক্রি ঝরনা ও নদী – বান্দরবানঃ  রেমাক্রি নদী ও ঝরনা বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও কম পরিচিত স্থান। থানচি হয়ে হেঁটে বা নৌকায় যেতে হয় এই জায়গায়। পানির স্বচ্ছতা, ঝরনার শব্দ আর পাহাড়ঘেরা পরিবেশ ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক স্বর্গ। লোকেশন: থানচি, বান্দরবান। যাওয়ার উপায়: থানচি থেকে হেঁটে বা নৌকায়।  বিশেষত্ব: পাহাড়ি নদী, ঝরনা, নৌকা ভ্রমণ। 

🔍 আরও পড়ুনঃ  

📍 ২. নয়াপাড়া জলপ্রপাত – চট্টগ্রামঃ  চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় অবস্থিত নয়াপাড়া জলপ্রপাত একটি লুকানো রত্ন। স্থানীয়রাই মূলত এই স্থানটির সৌন্দর্য উপভোগ করেন। লোকেশন: রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।বিশেষত্ব: সবুজ ঘেরা পাহাড়ি ঝরনা।  পর্যটকের সংখ্যা: কম, একান্ত নির্জন পরিবেশ। 

📍 ৩. হাকালুকি হাওর – সিলেটঃ হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাওরগুলোর একটি। শীতকালে এটি পরিণত হয় অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে। স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও জীবনযাত্রাও এখানে আকর্ষণীয়। লোকেশন: কুলাউড়া ও ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট। বিশেষত্ব: পাখি পর্যবেক্ষণ, গ্রামীণ জীবন। 

📍 ৪. চন্দ্রনাথ পাহাড় – সীতাকুণ্ডঃ  এই পাহাড়ে চন্দ্রনাথ মন্দির রয়েছে এবং হাইকিংয়ের জন্য দারুণ উপযোগী। পা রাখতেই মনে হবে আপনি প্রকৃতির কোলে এসে পৌঁছেছেন।লোকেশন: সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম। যাওয়ার উপায়: বাসে চট্টগ্রাম হয়ে।  বিশেষত্ব: হাইকিং, পাহাড়চূড়া থেকে সমুদ্রের দৃশ্য। 

📍 ৫. পানছড়ি জলপ্রপাত – খাগড়াছড়িঃ  কম প্রচারিত হলেও পানছড়ি জলপ্রপাত এক কথায় মনোমুগ্ধকর। পাহাড়ি পথে ট্রেক করে যেতে হয়, যা অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য উপযুক্ত।

📍 ৬. মহামায়া লেক – মীরসরাইঃ  এই কৃত্রিম লেকটি পাহাড় ও সবুজে ঘেরা। এখানে বোটিং, কায়াকিং-এর সুব্যবস্থা রয়েছে, যা একে একটি মনোরম পিকনিক স্পট করে তুলেছে।

📍 ৭. চায়ের রাজ্য লাউয়াছড়া বন – মৌলভীবাজারঃ  যদিও কিছুটা পরিচিত, তবুও অধিকাংশ পর্যটকই শুধুমাত্র সিলেট ঘুরে যান। লাউয়াছড়া বনের জীববৈচিত্র্য, ট্রেইলিং ও প্রকৃতি উপভোগ করার দারুণ সুযোগ রয়েছে এখানে।

📍 ৮. দুর্গাসাগর দীঘি – বরিশালঃ  বরিশালের অন্যতম প্রাচীন দীঘি এটি। ১৮ শতকে নির্মিত এই দীঘির সৌন্দর্য, বড় বড় গাছ, নৌকা চালানো সব মিলিয়ে এক অপার সৌন্দর্য।

📍 ৯. ডিম পাহাড় – থানচি, বান্দরবানঃ ডিম আকৃতির এই পাহাড় একেবারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে। পর্যটকদের জন্য এটি এখনও অনেকটাই অজানা, কিন্তু এর সৌন্দর্য অতুলনীয়।

📍 ১০. মুরগির চর – ভোলাঃ  সমুদ্রের বুকে এক বিস্ময়কর চর। অনেকটা কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের মতোই দেখতে, কিন্তু ভিড় একেবারেই নেই। প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার আদর্শ জায়গা।

📍 ১১. ভাটির চরের ম্যানগ্রোভ বন – সুনামগঞ্জঃ  সুন্দরবনের মতোই ম্যানগ্রোভ গাছ এবং জলের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গাছের শিকড় দেখলে মনে হবে আপনি নতুন এক জগতে প্রবেশ করেছেন।

📍 ১২. জাফলংয়ের পিছনের ঝরনাগুলো – সিলেটঃ  জাফলং বেশ পরিচিত হলেও এর পিছনের পাহাড় ও গোপন ঝরনাগুলো খুব কম মানুষ ঘুরে দেখে। ট্রেক করে যাওয়া যায় এসব ঝরনায়, যেগুলো ছবি তোলার জন্য দারুণ। 

📍 ১৩. নাফাখুম জলপ্রপাত – বান্দরবানঃ  বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাতগুলোর একটি। যেতে কিছুটা কষ্টকর হলেও পুরস্কারটি বিশাল – এক বিশাল জলপ্রপাতের গর্জন ও প্রাকৃতিক শান্তি।

📍 ১৪. কড়িকান্দি বিল – ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ পানির রাজ্য কড়িকান্দি বর্ষাকালে এক স্বপ্নপুরীর মতো। নৌকায় চড়ে পুরো বিল ঘোরা যায়, পাখি ও গাছপালা দেখার সুযোগ মেলে।

📍 ১৫. চন্দ্রনাথ হট স্প্রিং – চট্টগ্রামঃ  সীতাকুণ্ডের আরেক বিস্ময় – প্রাকৃতিক উষ্ণ প্রস্রবণ। এই জলের তাপমাত্রা সর্বদা গরম থাকে, যা শরীর ও মনের জন্য আরামদায়ক।

🏞️বাংলাদেশের পূর্ববঙ্গের  অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান

📍১. নীলাদ্রি লেক, সুনামগঞ্জ:  সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত এ লেকটির নীল রঙের পানি ও পাহাড় ঘেরা দৃশ্য মন কাড়ে সহজেই।

📍২. রূপকথার রাজ্য রাতারগুল, সিলেট: বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন। বর্ষাকালে নৌকা নিয়ে ঘোরার জন্য এক অসাধারণ স্থান।

📍৩. সাদাপাথর, ভোলাগঞ্জ, সিলেট:  বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অবস্থিত। ঝর্ণা ও সাদা পাথরের সংমিশ্রণে গঠিত এক অপূর্ব সৌন্দর্য।

📍৪. লালাখাল, জৈন্তাপুর, সিলেট   নীলচে সবুজ পানির নদী, যার পাশে নৌকাভ্রমণ সত্যিই শান্তির।

📍৫. মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, মৌলভীবাজার:  বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলপ্রপাত হলেও এখনও তুলনামূলকভাবে কম ঘোরা হয়।

📍৬. শ্রীমঙ্গল চা বাগান ও নীলকুঠি, মৌলভীবাজারঃ  চা বাগান, সাতরঙা চা ও পুরনো স্থাপত্য একসাথে উপভোগ করতে পারেন।

📍৭. বিছানাকান্দি, সিলেটঃ  ভারতীয় পাহাড় থেকে আসা ঝর্ণাধারা ও নদীর পাথরে বসে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ স্থান।

📍৮. তাহিরপুর চুনাপাথর খনি, সুনামগঞ্জঃ  চুনাপাথরে ভর্তি ছোট ছোট লেকগুলো দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়। 

📍৯. বাড়ইবুনিয়া, বরগুনাঃ বনাঞ্চল ও ম্যানগ্রোভে ভরপুর একটি সুন্দর পরিবেশ।

📍১০. আন্ধারমানিক নদী, পটুয়াখালী:ঃ  নাম শুনলেই রহস্যের আভাস পাওয়া যায়। প্রকৃতির নিস্তব্ধতা অনুভবের জন্য দারুণ জায়গা।

📍১১. চিম্বুক পাহাড়, বান্দরবানঃ ‘বাংলাদেশের দার্জিলিং’ নামে খ্যাত। সূর্যোদয় দেখতে হলে অবশ্যই ভ্রমণ করুন।

📍১২. বগা লেক, বান্দরবানঃ  প্রাকৃতিক কৃত্রিম হ্রদ, পাহাড় বেয়ে উঠে গেলে মন মাতানো দৃশ্য।

📍১৩. রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য, হবিগঞ্জঃ  বন্যপ্রাণী ও পাখিপ্রেমীদের জন্য চমৎকার এক জায়গা।

📍১৪. কায়াকুপাড়া, টেকনাফঃ  কম পরিচিত একটি সৈকত এলাকা, যেখানে কোলাহল নেই, শুধু প্রকৃতি।

📍১৫. কমলার দুধপাতা, খাগড়াছড়িঃ  ছোট ঝর্ণা ও প্রাকৃতিক লতাপাতা ঘেরা এক দৃষ্টিনন্দন এলাকা।

📍১৬. মিরিন্ডা লেক, রাঙামাটিঃ  কমলালেবুর মত রঙের পানি, hence the name!

📍১৭. ডিম পাহাড়, থানচি, বান্দরবানঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক এখান দিয়েই যায়।

📍১৮. সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ও ঝর্ণা, চট্টগ্রামঃ  শহরের কাছেই একটুকরো প্রাকৃতিক স্বর্গ।

📍১৯. সোনাদিয়া দ্বীপ, কক্সবাজারঃ  পর্যটকদের ভিড় নেই, রয়েছে কচ্ছপ, সামুদ্রিক পাখি আর ঝিনুকের খেলা।

📍২০. কাপ্তাই লেক, রাঙামাটিঃ  বিশাল জলাধার, যার মাঝে বোটিং এক ভিন্ন আনন্দ।

📍২১. মেঘামালা, নেত্রকোনাঃ  নীল পাহাড় ও মেঘের খেলা — এক অসম্ভব রোমান্টিক পরিবেশ।

📍২২. ভাটিপাড়া হাওর, কিশোরগঞ্জঃ  বর্ষাকালে এই অঞ্চল নৌকা দিয়ে ভ্রমণের জন্য অনন্য।

📍২৩. কুন্ডের পাথর, নেত্রকোনাঃ  প্রকৃতির ভাস্কর্যর মতো এই পাথরগুলো যেন গল্প বলে।

📍২৪. ছনছাড়া ঝর্ণা, বান্দরবানঃ  কম পরিচিত এক ঝর্ণা, তবে সৌন্দর্যে অনন্য।

📍২৫. তালুকদার বাড়ি, পাবনাঃ ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি, একসময় সিনেমার শুটিং স্পটও ছিল।

📍২৬. ঘাগড়া নদী, খাগড়াছড়িঃ  পাহাড়ের বুকে বয়ে যাওয়া নদী আপনাকে করবে বিমোহিত।

📍২৭. চকরিয়া ডুলাহাজারা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, কক্সবাজারঃ হাতি, হরিণ সহ নানা প্রাণীর অভয়ারণ্য।

📍২৮. মনপুরা দ্বীপ, ভোলাঃ  ভাসমান গরু, নিঃসঙ্গ সৈকত আর নদীঘেরা দ্বীপজীবন।

📍২৯. জাফলং, সিলেটঃ  পাথর খনন এলাকা হলেও চারপাশের দৃশ্যশোভা অতুলনীয়।

📍৩০. শালবন বিহার, ময়নামতি, কুমিল্লাঃ প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার, ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য এক খনি।

🏞️বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান

বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের  এমন অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান রয়েছে, যেগুলোর সৌন্দর্য, ইতিহাস ও বৈচিত্র্য অবিশ্বাস্যভাবে আকর্ষণীয়। এই ৩০টি গন্তব্য যদি আপনি একে একে ঘুরে দেখতে পারেন, তবে নিশ্চিতভাবেই আপনার ভ্রমণজীবন হবে সমৃদ্ধ ও স্মরণীয়।

📌 আপনি যদি এইসব স্থানে ভ্রমণ করতে চানঃ মৌসুম বিবেচনা করে পরিকল্পনা করুন। স্থানীয় গাইড বা মানুষদের পরামর্শ নিন। পরিবেশ রক্ষা ও স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান বজায় রাখুন।

ভ্রমণের সময় করণীয় ও বর্জনীয়,  কম খরচে দেশের ভিতরে ভ্রমণ টিপস।

বাংলাদেশের আরো কিছু জেলার অজানা কম পরিচিত পর্যটন স্থান এর নাম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো। এগুলো এখনও অধিকাংশ পর্যটকের নজরের বাইরে রয়েছে, তাই প্রকৃতির সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণ ভ্রমণের জন্য আদর্শ।

🌄রংপুর জেলার অজানা পর্যটন স্থান

 📍১. তিস্তা ব্রিজ ও নদীপাড়, রংপুরঃ  রংপুর শহরের কাছাকাছি তিস্তা নদী ও তার পাশের অঞ্চল এক অপূর্ব প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি করেছে। বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময় নদীপাড়ে বসে সময় কাটানো এক অন্যরকম অনুভূতি দেয়।

📍২. পীরগঞ্জের মঠ ও দীঘি, রংপুরঃ পীরগঞ্জ উপজেলায় কিছু পুরনো মঠ, মন্দির এবং দীঘি রয়েছে, যেগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক কিন্তু এখনও সেভাবে পর্যটকদের নজরে আসেনি।

🏞️ দিনাজপুর জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. মহারাজার রাজবাড়ি (কাহালু), দিনাজপুরঃ  কাহা্লু উপজেলার ছোট একটি গ্রামে অবস্থিত প্রাচীন মহারাজার রাজবাড়ি। এটি পরিত্যক্ত কিন্তু সুন্দর স্থাপত্য ও পরিবেশে ঘেরা।

📍২. নবাবগঞ্জের শালবন, দিনাজপুরঃ  নবাবগঞ্জ উপজেলার কিছু অংশে শালবনের বিস্তৃতি দেখা যায়, যেখানে পিকনিক ও ক্যাম্পিং-এর জন্য খুব সুন্দর পরিবেশ রয়েছে।

🏞️ পঞ্চগড় জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. চন্দ্রবান বিহার, পঞ্চগড়ঃ  বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই পুরাতন বৌদ্ধ বিহারটি ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয়।

📍২. ভেলুয়া নদীর কূল, পঞ্চগড়ঃ  কম পরিচিত ভেলুয়া নদীর কূল ধরে হাঁটতে হাঁটতে আপনি প্রকৃতির এক অন্যরকম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

🛕 লালমনিরহাট জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. গোকুন্ডা জমিদার বাড়ি, লালমনিরহাটঃ  পুরাতন ও পরিত্যক্ত এই জমিদার বাড়িটি স্থানীয় ইতিহাস বহন করে। আশেপাশে পুরনো দীঘি ও বাগান রয়েছে।

📍২. তিস্তা ব্যারাজ এর পেছনের গ্রামাঞ্চল, লালমনিরহাটঃ  তিস্তা ব্যারাজ অনেকেই দেখতে যান, কিন্তু ব্যারাজের পেছনের প্রাকৃতিক গ্রামাঞ্চল এখনো অজানা।

🌳 গাইবান্ধা জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. ফুলছড়ির চর, গাইবান্ধাঃ  তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলনস্থলে গঠিত চরে গেলে নদী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য সমন্বয় দেখা যায়। সেখানকার সূর্যাস্ত অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।

📍২. সাঘাটা বিল অঞ্চলঃ  প্রাকৃতিকভাবে গঠিত বিশাল বিল ও তার আশেপাশের পাখির আবাসস্থল এটি, যারা প্রকৃতিপ্রেমী তারা একবার ঘুরে দেখতে পারেন।

🏞️ জয়পুরহাট জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. বারোদাম পাহাড়, জয়পুরহাটঃ জয়পুরহাট জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এই পাহাড়টি এখনো তুলনামূলক অজানা। ট্রেকিং ও ক্যাম্পিংয়ের জন্য বেশ উপযোগী।

📍২. মহাস্থানগড় থেকে সংযুক্ত গ্রামাঞ্চল, জয়পুরহাটঃ  মহাস্থানগড় অনেকেই ঘুরতে যান, কিন্তু তার আশেপাশের ঐতিহাসিক গ্রাম ও প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী অনেকে মিস করে যান। 

🏕️ বগুড়া জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. করতোয়া নদীর তীর, বগুড়াঃ  বগুড়ার করতোয়া নদীর বিভিন্ন অংশে বেশ কিছু নির্জন পাড় পাওয়া যায়, যেখানে পিকনিক বা নৌকা ভ্রমণ উপভোগ করা যায়। 

📍২. শিবগঞ্জের পাথরঘাটা, বগুড়াঃ  এখানে একটি প্রাকৃতিক খনিজ পাথরের এলাকা রয়েছে যা এখনো অনেকের কাছে অজানা।

🏰 রাজশাহী জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. তানোরের কাচারিবাড়ি, রাজশাহীঃ  রাজশাহী শহর থেকে একটু দূরে অবস্থিত এই প্রাচীন কাচারিবাড়িটি ব্রিটিশ আমলের নিদর্শন।

🔍 আরও পড়ুনঃ  

📍২. পবা অঞ্চলের আমবাগান, রাজশাহীঃ রাজশাহী তো আমের জন্য বিখ্যাতই, কিন্তু পবা অঞ্চলের বড় বড় আমবাগান গুলোতে বসে সময় কাটানো এক অসাধারণ অনুভূতি।

🕌 নাটোর জেলার অজানা পর্যটন স্থান

📍১. গুরুদাসপুরের বিল ও বন,  নাটোরঃ  এখানে কয়েকটি বড় বিল ও জলাভূমি রয়েছে যেখানে হাজারো পাখি আসে, বিশেষ করে শীতকালে।

📍২. চলনবিলের উত্তরাংশ, নাটোরঃ   চলনবিল তো বিখ্যাত, কিন্তু এর উত্তরাংশে বেশ কিছু জায়গা আছে যেখানে কম পর্যটক যান, তাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পাওয়া যায়।

উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলা নিজ নিজ সৌন্দর্য, ইতিহাস ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর। কিন্তু এখনও অনেক স্থান সাধারণ মানুষের কাছে অজানা রয়ে গেছে। এসব জায়গায় যদি সঠিকভাবে পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলা যায় তাহলে তা হতে পারে দেশের পর্যটন শিল্পের অন্যতম দিক।

🏞️বাংলাদেশের  দক্ষিণবঙ্গের অসংখ্য অজানা পর্যটন/ভ্রমণ স্থান

নিচে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের (দক্ষিণবঙ্গের) কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার কিছু অজানা ও কম পরিচিত পর্যটন/ভ্রমণ স্থান তুলে ধরা হলোঃ 🧭 দক্ষিণবঙ্গের অজানা পর্যটন স্থানসমূহ

🌾 কুষ্টিয়া জেলা

📍১।  লালন শাহ মাজার (ছেঁউড়িয়া) – বিখ্যাত হলেও স্থানটি এখনও অনেক পর্যটকের অজানা।

📍২। শিলাইদহ কুঠিবাড়ি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত, কিন্তু পর্যটকদের আনাগোনা কম।

📍৩। হেমায়েতপুর জমিদার বাড়ি – ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের নিদর্শন, একেবারে অজানা একটি স্থান।

📍৪।  গড়াই নদীর তীরঘেঁষে গ্রামীণ নৌভ্রমণ – শান্তিপূর্ণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ।

🌾 চুয়াডাঙ্গা জেলা

📍১।  দর্শনা চেকপোস্ট ও রেলওয়ে জংশন – ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু কম ঘোরা হয়।

📍২। আলমডাঙ্গার বেলগাছি বিল – প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এক স্বর্গীয় স্থান।

📍৩। হাড়াভাঙ্গা নদী তীর – বর্ষাকালে বিশেষভাবে মনোরম।

🌾 মেহেরপুর জেলা

📍১। . আমঝুপি কুঠিবাড়ি – ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য উপযুক্ত গন্তব্য।

📍২।  ভবানীপুর রাজবাড়ি ধ্বংসাবশেষ – অজানা হলেও পুরাকীর্তির দারুণ নিদর্শন।

📍৩। মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স – যদিও পরিচিত, তবে অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের সংখ্যা কম।

🌾 যশোর জেলা

📍১। চাচড়া জমিদার বাড়ি – ঐতিহাসিক নিদর্শন।

📍২।  মণিরামপুরের কৃষ্ণনগর দিঘি – অজানা অথচ দর্শনীয়।

📍৩।  বেনাপোলের প্রান্তিক অঞ্চল – সীমান্তজুড়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য।

🌾 ঝিনাইদহ জেলা

১।  নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের বটগাছ – শতবর্ষী বিশাল বটগাছ।

২। কালীগঞ্জের রাজবাড়ি ধ্বংসাবশেষ – ইতিহাসের স্মারক।

৩।  হরিণাকুন্ডুর গ্রামীণ মেঠোপথ – সাইক্লিং ও হেঁটে ঘোরার জন্য আদর্শ।

🌾 মাগুরা জেলা

📍১। নবগ্রাম রাজবাড়ি – স্থানীয় ইতিহাসে গুরুত্ব বহন করে।

📍২।  শালিখা নদী ও বিলাঞ্চল – নিরিবিলি ভ্রমণের জন্য আকর্ষণীয়।

📍৩।  শ্রীপুরের পুরোনো জমিদার বাড়ি – লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা এক নিদর্শন।

🌾 নড়াইল জেলা

📍১। এসএম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা – শিল্পপ্রেমীদের জন্য সেরা।

📍২। চিত্রা নদীর পাড় – নৌকা ভ্রমণের জন্য আদর্শ।

📍৩। লোহাগড়া অঞ্চলের ধানের মাঠ ও কুটির শিল্প কেন্দ্র – গ্রামীণ সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ।

🌾 খুলনা জেলা

📍১। ত্রিশুলিয়া পিকনিক স্পট (রূপসা) – অল্পপরিচিত কিন্তু মনোমুগ্ধকর।

📍২। দাকোপ উপজেলার হরিণটানা বনাঞ্চল – সুন্দরবনের প্রাকপ্রবেশ অঞ্চল।

📍৩। জোড়াসিন্ধু বাজার এলাকায় মৎস্যচাষ কেন্দ্র – শিক্ষা ও ভ্রমণ একসাথে।

🌾 সাতক্ষীরা জেলা


📍১। ভোমরা সীমান্ত এলাকা – সীমান্ত সংলগ্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য।

📍২।  শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী – সুন্দরবনের অন্যতম প্রবেশপথ।

📍৩। তালার গঙ্গারামপুর কুঠিবাড়ি – উপনিবেশিক যুগের স্মৃতি।

🌾 বাগেরহাট জেলা

📍১।  কচিকাঁচার মাজার ও প্রাচীন মসজিদ সমূহ (মোড়েলগঞ্জ) – কম পরিচিত কিন্তু ঐতিহাসিক।

📍২। শুভদিয়া বনাঞ্চল – সুন্দরবনের বিস্তারধারী এক অংশ।

📍৩। পোড়াদাহ বিল ও জলাভূমি – পাখিপ্রেমীদের জন্য আদর্শ।

🔍 আরও পড়ুনঃ 

🔚  দক্ষিণবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব অজানা বা কম পরিচিত ভ্রমণস্থানগুলো শুধু সৌন্দর্যের আধারই নয়, বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জীববৈচিত্র্যের অনন্য সমাহার। এসব স্থান ঘুরে দেখলে পর্যটকদের নতুন অভিজ্ঞতা হবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিও লাভবান হবে।

📸 কেন যাবেন এই অজানা স্থানগুলোতে

পর্যটকদের ভিড় নেই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, ব্যতিক্রমী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর,  কম খরচে ভ্রমণের সুযোগ,  সামাজিক মাধ্যমে দারুণ ছবি পোস্ট করার স্পট, নিজেকে প্রকৃতির কাছাকাছি আনার সুযোগ। 

🧳 ভ্রমণের পূর্বে করণীয়ঃ  নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করুন, গাইড রাখার ব্যবস্থা করুন (বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায়),  পানি ও শুকনো খাবার কাছে রাখুন।  পরিবেশ রক্ষা করুন, ময়লা ফেলবেন না। স্থানীয়দের সম্মান করুন।

🔚লেখকের শেষ বক্তব্য

বাংলাদেশ শুধুমাত্র কক্সবাজার, সিলেট কিংবা সেন্টমার্টিনেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে এমন বহু অজানা রত্ন, যেগুলো অপেক্ষা করছে আপনার পদচিহ্নের। আজই নিজের ভ্রমণ ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন এসব অজানা সৌন্দর্যের সন্ধানে। ভ্রমণ করুন, জানুন, অনুভব করুন,  কারণ অজানাকে জানার মধ্যেই লুকিয়ে আছে সত্যিকারের রোমাঞ্চ।🟢

বাংলাদেশের অজানা পর্যটন ভ্রমণের স্থানসমূহ বিষয়ে বিস্তারিত এবং তথ্যবহুল দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এখান থেকে আপনি এই গাইডের মাধ্যমে যেকোনো প্রান্তে ভ্রমণ করতে পারবেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে আমরা নিত্য নতুন বিষয় প্রকাশ করে থাকি। আপনার অন্যান্য বিষয় জানতে চাইলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। ✨ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url