ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫টি ভ্রমণ স্থান
💰 ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫টি ভ্রমণ স্থান
ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫টি ভ্রমণ স্থান এই বিষয় নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। ভ্রমণ মানুষের জীবনের এক চরম বিনোদন ও আনন্দ পর্ব । সবাই ভ্রমন করতে পছন্দ করে কিন্তু ভ্রমণ পরিবেশ ও স্থান কেমন তা অজানা।
আপনারা যারা ঢাকার আশেপাশে একদিনের জন্য বেড়াতে বা ভ্রমণ করতে চান তারা আমাদের এই প্রবন্ধটি আদ্যপ্রান্ত পাঠ করুন এবং ভ্রমণের স্থান গুলি সম্বন্ধে বিস্তারিত জানুন। আশা করি আপনি আপনার কাংক্ষিত ভ্রমণ স্থান খুঁজে পাবেন। চলুন এবার শুরু করা যাক। আপনারা আমাদের এই ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ 💰 ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫টি ভ্রমণ স্থান
✅ ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর প্রাসঙ্গিক টিপস
📢 আমাদের শেষ বক্তব্যঃ ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫টি ভ্রমণ স্থান
💰 ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫ টি ভ্রমণ স্থান
(ঢাকা থেকে অল্প সময়ে ঘুরে আসুন প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক সৌন্দর্যের স্বর্গে)
📝 ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর উপযোগী ৩৫টি সেরা ভ্রমণ স্থানের তালিকা। কোথায় যাবেন, কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন ও কত খরচ—সব তথ্য একসাথে। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য অবশ্যই পড়ার মতো একটি গাইড।
🔍 বিনোদন ও মানসিক প্রশান্তির জন্য একটু ঘোরাঘুরি সবারই প্রয়োজন। কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে ঢাকার আশেপাশে এমন অনেক স্থান রয়েছে যেখানে আপনি একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন। এই আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরেছি ঢাকার কাছাকাছি ১৫টি চমৎকার ভ্রমণ গন্তব্য, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপনা, ও আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র।
📍 ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ৩৫ টি ভ্রমণ স্থান
১. সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ)
বিষয়বস্তু: প্রাচীন বাংলার রাজধানী, লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর।
দূরত্ব: ঢাকা থেকে ২৮ কিমি, যাতায়াত: বাস/মাইক্রোবাসে ১ ঘণ্টা, বিশেষ আকর্ষণ: পানাম নগর, বারা সর্দার বাড়ি, মেঘনা নদী। টিকিট মূল্য: জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা।
২. পানাম নগর ও সোনারগাও জাদুঘর
বিষয়বস্তু: প্রাচীন পরিত্যক্ত শহর। অবস্থান: সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ। বিশেষ আকর্ষণ: ৫২টি পুরোনো ভবনের ধ্বংসাবশেষ। ছবি তোলার জন্য উপযুক্ত স্থান।
৩. নবাবগঞ্জ (ঢাকার উপকণ্ঠ)ঃ বিষয়বস্তু: গ্রামীণ সৌন্দর্য ও খালের পাশের ঘোরাঘুরি। যাতায়াত: ঢাকার গাবতলী থেকে সরাসরি বাস। বিশেষ আকর্ষণ: ধলেশ্বরী নদী, পিকনিক স্পট, গ্রামের সৌন্দর্য।
৪. পদ্মা লাক্সারি রিসোর্ট , মাওয়াঃ
অবস্থান: মাওয়া ঘাট, বিষয়বস্তু: রিসোর্ট, নদীর ধারে খাওয়া-দাওয়া, বোট রাইড। খরচ: প্রবেশমূল্য ও খাবারের খরচসহ জনপ্রতি ৮০০-১৫০০ টাকা। যাতায়াত: গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ী থেকে বাসে ১.৫ ঘণ্টা।
৫. বিরুলিয়া জমিদার বাড়ি (সাভার)
বিষয়বস্তু: নদী ও সবুজ প্রকৃতি। যাতায়াত: উত্তরার দিকে সড়কপথে ১ ঘণ্টা। বিশেষ আকর্ষণ: নৌকায় ঘুরে বেড়ানো, খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ।
৬. বালিয়াটি জমিদার বাড়িঃ
অবস্থান: মানিকগঞ্জ, দূরত্ব: ঢাকা থেকে ৩৫ কিমি, বিষয়বস্তু: ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি, লেক। প্রবেশ ফি: ২০ টাকা। যাতায়াত: গাবতলী থেকে সরাসরি বাস।
৭. জিন্দা পার্কঃ
আরো পড়ুনঃ
অবস্থান: রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। বিষয়বস্তু: প্রাকৃতিক পার্ক, পিকনিকের জন্য আদর্শ। প্রবেশ মূল্য: ১০০ টাকা। বিশেষ আকর্ষণ: কৃত্রিম লেক, বোট রাইড, সবুজ মাঠ।
৮. সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধঃ
অবস্থান: সাভার। বিষয়বস্তু: মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি। প্রবেশ: ফ্রি, বিশেষ আকর্ষণ: মনোরম পরিবেশ, ইতিহাসের ছোঁয়া।
৯. আরএফএল ভ্যালি,
নরসিংদীঃ বিষয়বস্তু: আধুনিক থিম পার্ক। বিশেষ আকর্ষণ: ফুলের বাগান, রাইড, ছবি তোলা। প্রবেশ মূল্য: জনপ্রতি ২০০ টাকা। খরচ: পরিবার নিয়ে পিকনিকের আদর্শ স্থান।
১০. বাহাদুর শাহ পার্ক ও ঐতিহাসিক জিন্দাবাজারঃ অবস্থান: নারায়ণগঞ্জ শহর। বিষয়বস্তু: ঐতিহাসিক স্মৃতি, নদীর পার ঘুরে বেড়ানো।
১১. মিনি কক্সবাজার (মিরেরবাগ, কেরানীগঞ্জ)ঃ বিশেষ আকর্ষণ: কৃত্রিম সমুদ্রতীর, বালির প্রান্তর। যাতায়াত: কেরানীগঞ্জ হয়ে সিএনজি বা বাইকে। খরচ: জনপ্রতি ৫০–১০০ টাকা।
১২. ধলেশ্বরী নদীর তীর, কেরানীগঞ্জঃ বিষয়বস্তু: নদীভ্রমণ, গ্রামীণ সৌন্দর্য। নৌকা ভাড়া: ৩০০–৫০০ টাকা (দলীয়)। বোটপিকনিকের জন্য আদর্শ।
১৩. রাজেন্দ্রপুর চিড়িয়াখানা ও পিকনিক স্পটঃ অবস্থান: গাজীপুর। বিশেষ আকর্ষণ: চিড়িয়াখানা, পার্ক, বাচ্চাদের জন্য খেলার জায়গা। প্রবেশ ফি: ৫০ টাকা।
১৪. ভাওয়াল গড় ও জাতীয় উদ্যানঃ অবস্থান: গাজীপুর, বিশেষ আকর্ষণ: গভীর অরণ্য, হ্রদ, প্রাকৃতিক হাঁটা পথ। প্রবেশ মূল্য: ২০ টাকা। যাতায়াত: গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে সহজে পৌঁছানো যায়।
১৫. বেলাই বিল, কালিয়াকৈরঃ বিশেষ আকর্ষণ: শাপলা ফুল, বর্ষায় নৌকাভ্রমণ। সময়: বর্ষা মৌসুমে শ্রেষ্ঠ খরচ: নৌকা ও যাতায়াত মিলিয়ে জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা।
১৬। মহেরা জমিদার বাড়িঃ
মহেরা জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার একটি ঐতিহাসিক ও মনোমুগ্ধকর দর্শনীয় স্থান। এটি ইতিহাসপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় গন্তব্য। নিচে মহেরা জমিদার বাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
🏰 মহেরা জমিদার বাড়ির সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ মহেরা জমিদার বাড়িটি নির্মিত হয় ব্রিটিশ শাসনামলে, ১৮৯০ সালের দিকে। জমিদার পরিবারের মূল প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহা। তারা ছিলেন অত্যন্ত ধনী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি। বাড়িটি স্থাপত্যশৈলীতে ইউরোপিয়ান প্রভাব বহন করে এবং এটি চারটি প্রধান ভবন নিয়ে গঠিত।
🏛️ বাড়ির স্থাপত্য ও প্রধান ভবনসমূহঃ মহেরা জমিদার বাড়িতে চারটি প্রধান ভবন রয়েছে, প্রতিটির নাম ভিন্ন ভিন্নঃ ১। আনন্দ লজ – এটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভবন, গ্রীক স্থাপত্য অনুপ্রাণিত ও দৃষ্টিনন্দন।২। কালীচরণ লজ – সামনের দিকে বিশাল খোলা মাঠ এবং সুন্দর বাগান। ৩। চন্দ্র লজ – নকশা ও রঙের ব্যবহারে এটি খুব আকর্ষণীয়। ৪। কমল লজ – দ্বিতল এই ভবনটিও অত্যন্ত চমৎকার।
🌳 চারপাশের পরিবেশ ও সৌন্দর্যঃ বাড়ির চারপাশে রয়েছে খাল, পুকুর, ফুলের বাগান ও বিশাল মাঠ।বাড়ির পেছনে রয়েছে একটি সুন্দর দীঘি। শান্ত পরিবেশ ও সুনিপুণ নির্মাণশৈলী একে একটি এক্সক্লুসিভ পর্যটন স্থানে পরিণত করেছে।
📍 অবস্থান ও কীভাবে যাবেনঃ অবস্থান: মহেরা, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল জেলা। ঢাকা থেকে দূরত্ব: প্রায় ৮০ কিমি। যেভাবে যাবেনঃ ঢাকা থেকে বাসে করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর নেমে সিএনজি বা অটো রিকশায় মহেরা জমিদার বাড়ি। ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে চাইলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ধরে কুমুদিনী হাসপাতাল পার হয়ে মহেরা যাওয়া যায়।
🕒 খোলা থাকার সময় ও প্রবেশমূল্যঃ সময়: প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা।প্রবেশমূল্য: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা (পরিবর্তনশীল হতে পারে)।
📸 কি কি দেখার মতোঃ জমিদার বাড়ির ভবনগুলো, বিশাল বাগান ও খোলা মাঠ, ঐতিহাসিক পুকুর ও দীঘি। কুমুদিনী হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউশন (নিকটে)। স্থানীয় বাজার ও গ্রামীণ সৌন্দর্য।
🏨 রাত কাটানোর ব্যবস্থাঃ জমিদার বাড়িতে থাকার সুযোগ নেই, তবে মির্জাপুর ও টাঙ্গাইল শহরে বিভিন্ন গেস্ট হাউস ও হোটেল রয়েছে।
📌 কেন যাবেন মহেরা জমিদার বাড়িঃ ইতিহাস ও স্থাপত্য ভালোবাসেন যারা। ফ্যামিলি পিকনিক বা ডে ট্যুরের জন্য। ফটোগ্রাফি, প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ ও মানসিক প্রশান্তির জন্য।
🔚 মহেরা জমিদার বাড়ি শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন যা বাংলার জমিদার যুগের সাক্ষ্য বহন করে। স্বল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে ভ্রমণ উপযোগী এই স্থানটি নিঃসন্দেহে আপনার ভ্রমণ তালিকায় রাখা উচিত।
১৭। নুহাশ পল্লী
নুহাশ পল্লী—বাংলাদেশের কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের তৈরি এক মনোরম বাগানবাড়ি। ঢাকার কাছাকাছি, গাজীপুর জেলার পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত এই ৪০ বিঘা প্রকৃতি প্রেমের মৃত্যু সবুজ নন্দনকানন। এখানে রয়েছে ২৫০+ প্রজাতির ফলজ, বনজ, ঔষধি ও মশলা জাতীয় গাছ—with nameplates for each । স্থাপত্যে রয়েছে: শুটিং স্পট, দীঘি (লীলাবতী), ‘বৃষ্টি বিলাস’ ও ‘ভূত বিলাস’ নামের বাংলো। আছে নামাজের ঘর, লিচু–জাম–আম বাগান, মৎসকন্যা ভাস্কর্য, প্রাগৈতিহাসিক প্রতিকৃতি ও ডিম্বাকৃতির সুইমিং পুল ।
🗺️ অবস্থান ও যাতায়াতঃ অবস্থানঃ ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ১২ কিমি → এরপর হোতাপাড়া বাজার থেকে ≈৮ কিমি পশ্চিমে পিরুজালী গ্রামে।
যাওয়ার উপায়ঃ ঢাকা থেকে সরাসরি গাজীপুরের বাস → চৌরাস্তা নামবেন। চৌরাস্তা থেকে হোতাপাড়া = বাস ~ ৪০ টাকা, ৬০‑৮০ টাকা(loader) । হোতাপাড়া → নুহাশ পল্লী = সিএনজি ~ ১২০‑১৫০ টাকা বা লেগুনা ~ ৩০‑৪০ টাকা ।
🎟️ খরচ ও সময়ঃ দর ও সময়: ১২ বছর বয়সের উপরের দর্শকের প্রবেশ ফি = ২০০ টাকা; শিশু ফ্রি।সকাল ৮ টাকা থেকে বিকেল ৫ টাকা, মাগরিব পর্যন্ত বিশেষ সুবিধা আছে । প্রতি সপ্তাহে বন্ধ না—৭ দিনই খোলা । প্রতি ১৩ নভ ও ১৯ জুলাই (হুমায়ূন আহমেদের জন্ম ও মৃত্যু দিবস) ফ্রি প্রবেশ ।
পিকনিক ও বাংলো ভাড়া: ডিসেম্বর–মার্চে গ্রুপ ভাড়া (৩০০ জন): সাধারণ দিনে ~ ৫০ হাজার টকা; ছুটিতে ~ ৬০ হাজার ।‘ভূত বিলাস’ বা ‘বৃষ্টি বিলাস’ বাংলো: ৩০০০–৫০০০ টাকা ।
🧭 কী দেখবেনঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: ঘাসের কার্পেট, ফলদ ও ঔষধি উদ্ভিদ, পুকুর, লিলাবতী দীঘি, দ্বীপ, মৎসকন্যার ভাস্কর্য, প্রাগৈতিহাসিক পাথর–প্রতিমা ।শিল্পকলার ছোঁয়া: হুমায়ূন আহমেদের আবক্ষ মূর্তি, নামাজের ঘর, শুটিং সেট, সুইমিং পুল, এবং হাঁটুর উপর কটেজ ।
ℹ️ টিপস ও সার্ভিসঃ খাবার নেই, তবে বাইরে ঝুড়ি দোকান আছে; পিকনিকের জন্য নিজে খাবার নিয়ে যেতে পারেন । পার্কিং নিজ দায়িত্বে; পাশের হোতাপাড়া মাঝে খাবার ও স্ট্যান্ড পাওয়া যায় । রাতে থাকার ব্যবস্থা নেই, তবে ‘বৃষ্টি বিলাস’-এ দিনের বিশ্রাম সুযোগ পাওয়া যায় ।
কেন বানিয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদঃ গাছ এবং প্রকৃতি তাঁর অনন্য ভালোবাসার প্রতিফলন—বাংলাদেশের সম্ভাব্য সব গাছ নুহাশ পল্লীতে সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন তিনি ।
✨নুহাশ পল্লী ঘর-বাইরে ঢাকার কাছাকাছি একটি শীতল, শান্তিপূর্ণ, সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ভ্রমণের কেন্দ্র। একদিনে ঘুরে যাওয়ার উপযোগী স্পট—ছোট পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকা যায় না, তবে দিনের ভ্রমণে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
১৮। বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কঃ
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক – সংক্ষেপে বিবরণঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক বাংলাদেশের গাজীপুর জেলায় অবস্থিত একটি বৃহৎ এবং আধুনিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকা। এটি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১৩ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রায় ৩,৮১০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই পার্কে বন্যপ্রাণীদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।
এখানে সিংহ, বাঘ, হাতি, জিরাফ, হরিণ, জলহস্তীসহ নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। দর্শনার্থীরা বাসে চড়ে "সাফারি রাইড"-এর মাধ্যমে পশুদের কাছ থেকে সরাসরি দেখতে পারেন। এছাড়াও আছে পাখির খাঁচা, সাপ ঘর, হরিণ অঞ্চল, এবং শিশুবান্ধব বিনোদন ব্যবস্থা। প্রকৃতি ও প্রাণী প্রেমীদের জন্য বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক একটি অসাধারণ ভ্রমণ গন্তব্য।
১৯। জল ও জঙ্গলের কাব্যঃ
"জলে ও জঙ্গলের কাব্য" শিরোনামটি খুবই কাব্যিক ও প্রতীকধর্মী। এটি এমন একটি রচনার নাম হতে পারে যেখানে প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী, নদী, বনজীবন ও মানবজীবনের পারস্পরিক সম্পর্ককে কাব্যময়ভাবে উপস্থাপন করা হয়। আপনি যদি এটি নিয়ে একটি কবিতা, গল্প, ভ্রমণকাহিনি বা প্রবন্ধ লিখতে চান, তাহলে নিচের কিছু ধারণা দেওয়া হলো:
📜 প্রস্তাবিত কবিতা: "জলে ও জঙ্গলের কাব্য"ঃ
জলে ও জঙ্গলে জাগে এক ছন্দ,
নিসর্গে বাজে জীবনমন্দ।
নদীর ধারা গায় গান,
বনে জাগে পশুপাখির প্রাণ।
তটিনীর কূলে জোনাকির আলো,
বাঘের ডাক আর পাখির ভালো।
মেঘলা আকাশ, জলজ লতা,
জীবন যেন এক বুনো কথা।
নীরব জলে পদ্ম ফুটে,
স্মৃতিরা খেলে পাতার তলে।
মানুষ আসে, মানুষ যায়,
জল-জঙ্গল চিরকাল বাঁচায়।
📖 ভ্রমণ প্রবন্ধের ধারণা: শিরোনাম: "জলে ও জঙ্গলের কাব্য: সুন্দরবনের বুকে একদিন"। সুন্দরবনের নদী ও বনের একদিনের অভিজ্ঞতা। বাঘ, হরিণ, পাখি, কাঁকড়া, ম্যানগ্রোভের কথা। প্রকৃতির নিঃসর্গ ও জীবনযাত্রা। জল-জঙ্গলের সঙ্গে মানুষের টিকে থাকার সংগ্রাম। পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতার আহ্বান।
🪵 ছোটগল্পের থিম: একটি ছোট ছেলে তার দাদার সঙ্গে বনে ও নদীর ধারে সময় কাটাতে গিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলে। হঠাৎ একদিন সে একটি আহত হরিণের বাচ্চাকে উদ্ধার করে এবং তার মাধ্যমে শেখে – "প্রকৃতি আমাদের মা, তাকে ভালোবাসা উচিত।"।
২০। ড্রিম হলিডে পার্ক
ড্রিম হলিডে পার্ক – সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ ড্রিম হলিডে পার্ক বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র। এটি শিশু ও বড়দের জন্য একসাথে উপভোগযোগ্য একটি পার্ক যেখানে রয়েছে ওয়াটার পার্ক, থিম পার্ক, রাইডস, কটেজ, সুইমিং পুল, কৃত্রিম সমুদ্র, এবং বিভিন্ন আকর্ষণীয় খেলার ব্যবস্থা। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে একদিনের ভ্রমণের জন্য এটি একটি চমৎকার গন্তব্য। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং নিরাপত্তার কারণে এটি সারা বছর দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
২১। শালবন বৌদ্ধবিহার
শালবন বদ্ধবিহার (Shalban Vihara) সংক্ষেপেঃ শালবন বদ্ধবিহার বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার ময়নামতিতে অবস্থিত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। এটি পাল রাজবংশের রাজা ধর্মপাল (৮ম–৯ম শতক) নির্মাণ করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। এই বিহারটি একটি চতুর্ভুজ আকৃতির স্থাপনা, যার কেন্দ্রে রয়েছে একটি প্রধান মন্দির এবং চারপাশে রয়েছে ১১৫টি কক্ষবিশিষ্ট মঠ।
এটি বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো এবং এখানে তৎকালীন পাণ্ডিত্যের চর্চা হতো। প্রত্নতাত্ত্বিক খননে বহু প্রাচীন নিদর্শন, মূর্তি ও মুদ্রা পাওয়া গেছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও পর্যটন কেন্দ্র।
২২। গোলাপগ্রাম
গোলাপ গ্রাম সংক্ষেপেঃ গোলাপ গ্রাম বাংলাদেশের সাভারের শিমুলিয়ায় অবস্থিত একটি সুন্দর গ্রাম, যা গোলাপ ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। এই গ্রামে বছরের অধিকাংশ সময় জুড়েই নানা প্রজাতির গোলাপ চাষ করা হয়। রাজধানী ঢাকার খুব কাছেই হওয়ায় পর্যটক ও ফুলপ্রেমীদের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। এখানকার কৃষকরা গোলাপ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফুল সরবরাহ করে। শীতকাল এলে গোলাপ গ্রাম আরও রঙিন ও মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে।
২৩। পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক
পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক - সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক, ঢাকা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশস্ত মহাসড়ক, যা কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শুরু হয়ে পূর্বাচল নতুন শহর পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি রাজধানীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা-গাজীপুর সংযোগে বড় সুবিধা দেয়। ৩০০ ফিট প্রস্থের এই সড়কটি আবাসন প্রকল্প, বাণিজ্যিক উন্নয়ন এবং আধুনিক শহর গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসেবে বিবেচিত।
২৪। মৈনট ঘাট, দোহার
মৈনট ঘাট, দোহার – সংক্ষেপে বিবরণঃ মৈনট ঘাট ঢাকার দোহার উপজেলায় পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় একদিনের ভ্রমণস্থান। এটি "মিনি কক্সবাজার" নামে পরিচিত, কারণ এখানকার বিস্তৃত নদীতীর ও বালুময় পরিবেশ সমুদ্রসৈকতের মতো মনে হয়। ঢাকার খুব কাছাকাছি হওয়ায় স্বল্প সময়ে যাওয়া যায় এবং পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে আসার জন্য এটি এক আদর্শ স্থান। নদীতে নৌকা ভ্রমণ, সূর্যাস্ত দেখা এবং নদীতীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এখানে।
২৫। নিকলী হাওর
নিকলী হাওর – সংক্ষেপে বিবরণঃ নিকলী হাওর বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলায় অবস্থিত একটি মনোরম জলাভূমি। বর্ষাকালে এটি এক বিস্তীর্ণ জলরাশিতে পরিণত হয় এবং তখন নৌকাভ্রমণের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। নিকলী হাওরে নৌকায় ভ্রমণ, হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ, এবং পাখিদের কলকাকলি পর্যটকদের বিমোহিত করে। এটি একদিনের ভ্রমণের জন্য একটি আদর্শ স্থান।
২৬। বেলাই বিল
বেলাই বিল সংক্ষেপে: বেলাই বিল বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলাভূমি। এটি স্থানীয় জনগণের কাছে খুবই পরিচিত একটি পর্যটন স্থান। বর্ষাকালে বিলে পানি ভরে যায় এবং এর সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহুগুণ। বেলাই বিল মাছ ধরার জন্য বিখ্যাত, পাশাপাশি নৌকা ভ্রমণ, পাখি দেখা এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের জন্যও এটি উপযুক্ত স্থান। শীতকালে নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এখানে আশ্রয় নেয়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণ করে। এটি প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের এক মনোমুগ্ধকর মিলনস্থল।
২৭। মেঘনার চর, আড়াইহাজার
মেঘনার চার, আড়াই হাজার – সংক্ষেপেঃ মেঘনার চার হলো মেঘনা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা দ্বীপ বা চরাঞ্চল। এটি একটি জনপ্রিয় ভ্রমণস্থান। আড়াই হাজার (আড়াইহাজার) উপজেলা নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত, যেখানে মেঘনার এই চারটি চরের অবস্থান রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নৌভ্রমণ ও পাখিদের দেখা মেলে বলে জায়গাটি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয়।
২৮। জিনজিরা প্রাসাদ
জিনজিরা প্রাসাদ – সংক্ষেপে বিবরণ:জিনজিরা প্রাসাদ (Jinjira Palace) বাংলাদেশের ঢাকার কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ। এটি মোগল আমলের নিদর্শন হিসেবে পরিচিত এবং সুবাহদারদের বাসভবন ও কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ১৬শ শতকের শেষ দিকে এটি নির্মিত হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরিবারের অনেক সদস্য এখানে বন্দি ছিলেন। প্রাসাদের স্থাপত্যে মোগল ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী নির্মাণশৈলীর মিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।
২৯। আশুলিয়া
আশুলিয়া সংক্ষেপে: আশুলিয়া ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, যা সাভার উপজেলার অন্তর্গত। এটি শিল্প, গার্মেন্টস কারখানা এবং বাসস্থানের জন্য প্রসিদ্ধ। আশুলিয়ায় বহু গার্মেন্টস কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রিসোর্ট ও আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় এটি দ্রুত বর্ধনশীল একটি এলাকা হিসেবে পরিচিত। পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই পথে যাতায়াত করে।
৩০। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (JU) - সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি অন্যতম স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, যা ঢাকার সাভারে অবস্থিত। এটি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বন্যপ্রাণী (বিশেষ করে শীতকালে আগত অতিথি পাখি), এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ একাডেমিক পরিবেশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশেষভাবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, কলা, ব্যবসা, জীববিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন অনুষদ রয়েছে। এখানকার নাটক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডও দেশজুড়ে প্রসিদ্ধ।
সংক্ষিপ্ত তথ্য: প্রতিষ্ঠা: ১৯৭০, অবস্থান: সাভার, ঢাকা, বৈশিষ্ট্য: একমাত্র সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়।পরিচিতি: অতিথি পাখি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক চর্চা। এটি উচ্চশিক্ষার জন্য একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।
৩১। মায়াদ্বীপ, নারায়ণগঞ্জ
মায়া দ্বীপ, নারায়ণগঞ্জ – সংক্ষেপে পরিচিতি: মায়া দ্বীপ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি মনোরম দ্বীপ। এটি মূলত শীতলক্ষ্যা নদীর শাখা নদীর মাঝে গড়ে ওঠা একটি ছোট দ্বীপ, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নির্জন পরিবেশ এবং সবুজে ঘেরা লোকালয়ের জন্য পরিচিত। ঢাকার নিকটবর্তী হওয়ায় এটি একটি জনপ্রিয় একদিনের ভ্রমণস্থান হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। নৌকাভ্রমণ, ছবি তোলা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার জন্য এটি উপযুক্ত স্থান।
৩২। যমুনা রিসোর্ট
যমুনা রিসোর্ট – সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ যমুনা রিসোর্ট বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় অবকাশযাপন কেন্দ্র, যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও যমুনা গ্রুপের অধীনে পরিচালিত। এটি রাজধানী ঢাকা থেকে সহজেই যাওয়া যায় এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও নিরিবিলি পরিবেশের কারণে ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। রিসোর্টটিতে রয়েছে সুইমিং পুল, ওয়াটার পার্ক, রেস্টুরেন্ট, শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা এবং পরিবার নিয়ে একদিনের ভ্রমণ কিংবা রাতে থাকার সুবিধা। ছুটির দিনে বা অবসরে পরিবার, বন্ধু বা প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
অবস্থান: জমুনা রিসোর্ট, জোয়ার সাহারা, ঢাকা বা যমুনা ফিউচার পার্কের নিকটবর্তী এলাকা।
বিশেষত্ব:প্রাকৃতিক পরিবেশ, আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা, পরিবারসহ নিরাপদ ঘোরার পরিবেশ, এটি দিনভ্রমণ, পিকনিক, কর্পোরেট আউটিং বা রিফ্রেশমেন্টের জন্য উপযুক্ত একটি রিসোর্ট।
৩৩। ভাওয়াল রিসোর্ট
ভাওয়াল রিসোর্ট সংক্ষেপে পরিচিতি: ভাওয়াল রিসোর্ট একটি জনপ্রিয় অবকাশ যাপন কেন্দ্র যা গাজীপুর জেলার ভাওয়াল গড় অঞ্চলে অবস্থিত। ঢাকার খুব কাছেই হওয়ায় এটি পরিবার, বন্ধু ও কর্পোরেট আউটিংয়ের জন্য আদর্শ স্থান। সবুজে ঘেরা পরিবেশ, আধুনিক কটেজ, সুইমিং পুল, কনফারেন্স রুম এবং নানান বিনোদনমূলক ব্যবস্থার কারণে এটি দর্শনার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। যান্ত্রিক শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে ভাওয়াল রিসোর্ট একটি চমৎকার গন্তব্য।
৩৪। রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট
রাজেন্দ্র ইকো রিসোর্ট – সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
📍 অবস্থান ও পরিবেশঃ গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুর-ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে, প্রায় ৮ কিলোমিটার অভ্যন্তরে বিশাল শালবনের মধ্যে অবস্থিত ।৮০ বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এই রিসোর্টে ১৯টি চার তলা ভবন, ২৬টি কটেজ এবং ২২টি ওয়াটারফ্রন্ট কটেজ রয়েছে । 🍃 প্রকৃতি ও ডিজাইনঃ ঘন বনভূমিতে আবদ্ধ থাকা, কৃত্রিম বনায়ন, দর্শনীয় বাগান, খোলা মাঠ ও ছায়াময় কাঠ-ঘর এই অভিজ্ঞতাকে আরও পূর্ণ করে তোলে ।
প্রতিটি ভবনে ছাদের উপর ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে, যা থেকে পুরো রিসোর্ট আর বনাঞ্চল দেখা যায় ।
🏨 সুবিধা ও আকর্ষণঃ রুমের ধরন: কটেজ, ওয়াটারফ্রন্ট কটেজ, মাটির ঘর। সুইমিং পুল, কিডস জোন, প্লে গ্রাউন্ড, স্পা ও ম্যাসাজ পার্লার, রেস্তোরাঁ, পিঠাঘর ও বারবিকিউ সুবিধা পাওয়া যায় । কৃত্রিম হ্রদে মাছ ধরা, বোটিং, সাইকেল রাইডিং, জৈব কৃষিকাজ ও পার্কিং ব্যবস্থা আছে ।
📦 প্যাকেজ ও খরচঃ ডে-লং (দিনব্যাপী): ২ জনের জন্য সকাল ও বিকেলের নাস্তা, দুপুরের খাবার, একটি রুম, সাঁতার, প্লে এরিয়া—প্রায় ৳৫,৫০০ থেকে ৭,০০০/৯,০০০ (কটেজ বা ওয়াটারফ্রন্ট) । নাইট-স্টে (রাতসহ): ভোর–সন্ধ্যা সম্পূর্ণ সুবিধাসহ—প্রায় ৳৯,০০০ থেকে ১২,৫০০ । গ্রুপ/কর্পোরেট বা পিকনিক প্যাকেজ: দের জন্য—প্রতি জন প্রতি দিন ৳১,৮০০–২,৩০০ ।
🚗 যাতায়াতঃ ঢাকা থেকে গাড়িতে: টঙ্গী–গাজীপুর মোড় হয়ে মহাসড়ক ধরে, নির্দিষ্ট রাস্তা অনুসরণ করে সহজেই পৌঁছানো যায় । পাবলিক: ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ-মুখী বাস অথবা গাজীপুর গিয়ে মিনিবাস, তারপর অটো/সিএনজি নিতে হয় । বাস ভাড়া সাধারণত ৳১০০–১৫০, অটো/সিএনে ৪–৬ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ পথ।
👍 কেন যাবেনঃ ঢাকা থেকে মাত্র ≈১ ঘণ্টা দূরে প্রকৃতিক একান্ত অনুভূতি। প্রাকৃতিক বন, জল ও আরাম—সবকিছু মিলিয়ে একটি রিফ্রেশিং গেটঅ্যাওয়ে। সুইমিং পুল, শিশুদের বিনোদন, সব বয়সের জন্য উপযোগী অভিজ্ঞতা।
৩৫। সোনারগাঁও লোকশিল্প ও জাদুঘরঃ
🏛️ ঐতিহাসিক ও প্রশাসনিক বিবরণঃ প্রতিষ্ঠিত: শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ১২ মার্চ ১৯৭৫ সালে পানাম নগরের একটি পুরনো বাড়িতে এই জাদুঘর শুরু করেন; পরে এটি বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সোনারগাঁওয়ে ১৫০ বিঘা জুড়েই ছড়িয়ে দেয়া হয়।
আরো পড়ুনঃ
অবস্থান: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র ~১ কিমি অভ্যন্তরে, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে; ঢাকার কেন্দ্র থেকে ≈২৫ কিমি দূরে, যাত্রায় আনুমানিক ১ ঘণ্টা সময় লাগে ।
🧰 সংগ্রহ ও প্রদর্শনঃ প্রদর্শনী: প্রাচীন ও আধুনিক কাঠের খোদাই, পটচিত্র, মুখোশ, আদিবাসী শিল্প, গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি, লোক বাদ্যযন্ত্র, টেরাকোটা, তামা-তালের তৈরী বস্তু, লোহার শিল্প, লোক অলংকার—মোট ১০টি গ্যালারিতে এসব সামগ্রী রাখা আছে । নতুন সমসাময়িক জাদুঘর (জয়নুল আবেদিন স্মৃতি জাদুঘর)– এখানে কাঠ ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে শিল্প ও প্রক্রিয়া প্রদর্শন করা হয় ।
সম্পদগুলো: মাটির পাত্র, মেঝার টেরাকোটা, বেত-ঐশ্বর্যপূর্ণ কাঠের দোরজা ও ঘর, নকশিকাঁথা, জামদানি, একতারা, নৌকা মডেল, আঞ্চলিক সংগীত উপকরণ ইত্যাদি ।
🏞️ পরিবেশ ও সুযোগঃ সম্পূরক সুযোগ: বিশাল লেক, বোট ভ্রমণ, মৎস্য শিকার, গ্রামীণ উদ্যান, পাঠাগার, ডকুমেন্টেশন সেন্টার, সেমিনার হল, ক্যান্টিন ও কারুকার্য মঞ্চ । এটি শুধু শিক্ষা বা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নয়, বরং পিকনিকের জন্যও জনপ্রিয়—দেশজুড়ে স্কুল, পরিবার, বিদেশি পর্যটক এবং লোকজন এখানে ঘুরতে এসে সময় কাটান ।
🎯 সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘর হলো বাংলার ঐতিহ্য, কৃষিজীবন, গ্রামীণ ও আদিবাসী কারুশিল্প সংরক্ষণের অমূল্য উৎস। এটি একটি কলেজাকৃতির নান্দনিকতা ও ওয়াল্ডফেয়ার পরিবেশ তার সঙ্গে ব্যতিক্রমী ভৈরবে সমৃদ্ধ। এখানে পুরনো দিনের জীবন, কারুশিল্প ও শিল্পীরা ভাস্কর্যমূল্য ও সংগ্রামী শিল্পীর কাজ দেখতে পাওয়া যায়।
⚠️ মনে রাখবেনঃ রিসোর্টটি বনভূমির মধ্যে, তাই নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় খাবার-দ্রব্য বহন করা ভালো।রাতের পরামর্শবিহীন থাকলে সম্ভব নয়; সন্ধ্যার আগে রওয়া দেওয়া যুক্তিসঙ্গত ।😊
📸 ছবি তোলার জন্য সেরা স্থানসমূহঃ পানাম নগর, জিন্দা পার্ক, বালিয়াটি জমিদার বাড়ি, পদ্মা রিসোর্ট, আরএফএল ভ্যালি।
🚌 যাতায়াত সংক্রান্ত টিপসঃ চেষ্টা করুন সকাল ৭টার মধ্যে রওনা হতে। ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে সুবিধা বেশি। বাস বা সিএনজি ব্যবহার করলে স্থানীয় সময় জেনে বের হন। ব্যাকআপ রুট জেনে নিন (জ্যাম এড়াতে)।
💰 ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর আনুমানিক খরচ (প্রতি ব্যক্তি ভিত্তিতে)ঃ
স্থান গড় খরচ
সোনারগাঁও ও পানাম নগর ৩০০-৫০০ টাকা
পদ্মা রিসোর্ট ৮০০-১৫০০ টাকা
জিন্দা পার্ক ৪০০-৬০০ টাকা
বালিয়াটি ২০০-৩০০ টাকা
ভাওয়াল গড় ২০০-৩০০ টাকা
✅ ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর প্রাসঙ্গিক টিপস
পানির বোতল ও হালকা খাবার রাখুন, ক্যামেরা বা মোবাইলের চার্জ যেন থাকে, অতিরিক্ত জামাকাপড় ও ছাতা সঙ্গে রাখুন বর্ষায়। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন ও পরিবেশ নষ্ট করবেন না।
📢 আমাদের শেষ বক্তব্যঃ ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর ১৫টি ভ্রমণ স্থান
ঢাকার আশেপাশে একদিনে বেড়ানোর মতো এত সুন্দর ও চমৎকার ভ্রমণস্থান রয়েছে যে আপনি সহজেই পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে একটি উপভোগ্য দিন কাটাতে পারেন। ঐতিহাসিক, প্রাকৃতিক ও আধুনিক—সব ধরনের ভ্রমণপ্রেমীদের জন্যই কিছু না কিছু রয়েছে। তাই ছুটির দিনে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন কাছের একদিনের গন্তব্যে।
আপনি আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে করার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের এই ধরনের লেখা জানতে হলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত অনুসরণ করুন তাহলে অনেক বিষয় জানতে পারবেন। এই ওয়েবসাইটের বিষয়গুলি আপনার বন্ধু ও পরিচয় ওজনদের সাথে শেয়ার করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url