আধুনিক অর্থনীতিতে ঈসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ-সম্মত বিনিয়োগের দিশা
🟢 আধুনিক অর্থনীতিতে ঈসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ-সম্মত বিনিয়োগের দিশা
✅ আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ পদ্ধতি কীভাবে নৈতিক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিশা দেখাচ্ছে, তার বিস্তারিত বিশ্লেষণ এই প্রবন্ধে উপস্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের যে অবদান এই আর্টিকেল পাঠ করলে তা বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আপনি জানতে চান আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া সম্মত বিনিয়োগের ভিসা কেমন। এ বিষয়টি জানতে চাইলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পাঠ করুন এবং বিস্তারিত জানতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংকের সাথে হয়ে কোরিয়া সম্মত বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করুন এবং সুদমুক্ত লেনদেন করুন।
পেজ সূচিপত্রঃ আধুনিক অর্থনীতিতে ঈসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ-সম্মত বিনিয়োগের দিশা
🕌আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগের দিশা
🏠 বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতির জটিল ও অস্থির পরিবেশে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। ইসলামী শরিয়াহর ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত এই ব্যাংকিং ব্যবস্থা আজ আধুনিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ
রিবা (সুদ) পরিহার, অংশীদারিত্বভিত্তিক লেনদেন ও নৈতিক বিনিয়োগের মাধ্যমে এটি অর্থনীতিকে করেছে আরও মানবিক ও ন্যায়নিষ্ঠ। আজকের প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগের রূপরেখা, এর প্রভাব, ক্ষেত্র ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে।
আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকিং একটি বিকল্প ও ন্যায়ভিত্তিক বিনিয়োগ কাঠামো প্রদান করে, যা সুদবিহীন এবং শরিয়াহ-অনুমোদিত পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। এ ব্যাংকগুলো মূলত মুশারাকা (অংশীদারিত্ব), মুদারাবা (লাভ-ক্ষতির অংশীদারিত্ব), ইজারা (ইজারা বা ভাড়াভিত্তিক বিনিয়োগ) এবং মুরাবাহা (লাভসহ পণ্য বিক্রয়) এর মাধ্যমে বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
আধুনিক সময়ে ইসলামী ব্যাংকগুলোঃ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা ও কৃষি খাতে বিনিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছে।হালাল শিল্প ও উৎপাদনমুখী খাতে অর্থায়ন করছে। ডিজিটাল ব্যাংকিং ও ফিনটেক সমাধান ব্যবহার করে শরিয়াহ ভিত্তিক সেবা সম্প্রসারণ করছে। সবুজ অর্থনীতি (Green Finance) ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDGs) অর্জনে শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
ফলে, ইসলামী ব্যাংকিং এখন কেবল একটি ধর্মীয় অর্থনৈতিক মডেল নয়, বরং আধুনিক অর্থনীতিতে নৈতিক, ন্যায়সংগত ও ঝুঁকি ভাগাভাগির ভিত্তিতে একটি টেকসই বিনিয়োগের দিশা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
📌 ইসলামী ব্যাংকিং কী এবং শরিয়াহ ভিত্তিক বিনিয়োগের মূলনীতি
ইসলামী ব্যাংকিং হলো এমন একটি আর্থিক ব্যবস্থা, যা কুরআন ও হাদীসের আলোকে পরিচালিত হয়। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যঃ সুদ (Riba) নিষিদ্ধ, হারাম ব্যবসা ও জুয়া পরিহার, মুদারাবা ও মুশারাকা ভিত্তিক বিনিয়োগ, আসলে ও লাভে অংশীদারিত্ব, সম্পদে প্রকৃত মালিকানা ও ঝুঁকি বণ্টন।
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়া ভিত্তিক বিনিয়োগের মূলনীতি সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলোঃ ১। সুদমুক্তি (Riba-Free): ইসলামী ব্যাংকের সব বিনিয়োগ কার্যক্রম সুদ থেকে মুক্ত থাকে, যা কুরআন ও হাদীস দ্বারা নিষিদ্ধ।
২। লাভ-ক্ষতির অংশীদারিত্ব (Profit and Loss Sharing): বিনিয়োগের ভিত্তি হয় মুদারাবা ও মুশারাকা প্রথার মাধ্যমে, যেখানে উভয় পক্ষ লাভ ও ক্ষতিতে অংশীদার।
৩। বাস্তব সম্পদের উপর ভিত্তি (Asset-Backed Financing): প্রতিটি লেনদেন বাস্তব সম্পদ, পণ্য বা পরিষেবার ভিত্তিতে হতে হয়। কাগুজে অর্থ বা অনুমাননির্ভর লেনদেন গ্রহণযোগ্য নয়।
৪। জুয়া ও অনিশ্চয়তা নিষিদ্ধ (No Gharar or Maysir): জুয়া, ধোঁকাবাজি বা অনিশ্চয়তা নির্ভর কোনো চুক্তি বৈধ নয়।
৫।শরিয়াহ পরিপালন (Shariah Compliance): বিনিয়োগ কার্যক্রম ইসলামি শরিয়াহ্ বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
৬। নৈতিকতা ও সমাজকল্যাণ (Ethical and Socially Responsible): বিনিয়োগ অবশ্যই নৈতিক হতে হবে এবং সমাজের কল্যাণে সহায়ক হতে হবে; হারাম (নিষিদ্ধ) খাতে যেমন মদ, জুয়া, অস্ত্র ইত্যাদিতে বিনিয়োগ নিষিদ্ধ। এই মূলনীতিগুলোর ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
📊 আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের প্রসার ও গুরুত্ব
🔹 বিশ্বব্যাপী ইসলামী ব্যাংকিং খাতের পরিসংখ্যান (২০২৫)ঃ ইসলামী ব্যাংকিং সম্পদের পরিমাণ: $৩.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইসলামী ব্যাংকের সংখ্যা: ৫০০টির বেশি। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার: ব্যাংকিং সম্পদের প্রায় ৩০%। আর্থিক প্রবৃদ্ধি হার (বার্ষিক): গড়ে ১২-১৫% (সূত্র: IFSB, ২০২৫)।
আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এটি সুদমুক্ত ও শরিয়াহভিত্তিক নীতিমালার মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা ন্যায়, নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপর গুরুত্ব দেয়। ইসলামী ব্যাংকগুলো মুরাবাহা, মুশারাকা, মুদারাবা, ইজারা ইত্যাদি শরিয়াহসম্মত বিনিয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে, যা ঝুঁকি ভাগাভাগি ও সম্পদের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করে।
বিশ্বব্যাপী মুসলিম ও অমুসলিম দেশগুলোতে ইসলামী ব্যাংকের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় দিক থেকে নয়, বরং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, নৈতিক বিনিয়োগ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কার্যকর ভূমিকার কারণে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। সামগ্রিকভাবে, আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রসার অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং টেকসই উন্নয়নের পথে একটি শক্তিশালী অবদান রাখছে।
🧭ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগের মূল দিশাসমূহ
১. 🏢 আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও এসএমই বিনিয়োগঃ ইসলামী ব্যাংকগুলো এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য মুরাবাহা, মুশারাকা ও ইজারা ভিত্তিক ফান্ডিং দিয়ে থাকে। কৃষি, খুচরা ব্যবসা ও কুটির শিল্পে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দেয়।
২. 🏗️ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্সিংঃ অংশীদারিত্ব ভিত্তিক প্রকল্প যেমন—হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা নির্মাণে মুদারাবা ও ইজারা মডেলে অর্থায়ন করা হয়।
৩. 🌿 সবুজ বিনিয়োগ (Green Finance)ঃ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগের ধারা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. 🕌 ওয়াকফ ও সামাজিক বিনিয়োগঃ ওয়াকফ সম্পদের উন্নয়নে শরিয়াহ কমপ্লায়েন্ট ফান্ড গঠন। দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ (মাইক্রোফাইন্যান্স) কার্যক্রম।
📘 শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগের জনপ্রিয় মোডসমূহ
বিনিয়োগ মডেল বিবরণ
মুশারাকা অংশীদার ভিত্তিক ব্যবসায় বিনিয়োগ
মুদারাবা মূলধনদাতা ও উদ্যোক্তার অংশীদারিত্বে মুনাফাভাগ
মুরাবাহা লাভসহ পূর্বনির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রয়
ইজারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সম্পদ ভাড়া দেওয়া
সুকুক (Islamic Bond) প্রকল্প ভিত্তিক শেয়ার বিক্রয়
📈 বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থা (২০২৫)
ইসলামী ব্যাংক সংখ্যা: ১০টি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক + ১৯টি ইসলামী শাখা। সর্বমোট বিনিয়োগ: প্রায় ২,৩০,০০০ কোটি টাকা।
বিনিয়োগ খাতঃ উৎপাদন খাত: ৩৪%, বাণিজ্য খাত: ৩১%, নির্মাণ ও পরিবহন: ১৬%, কৃষি ও এসএমই: ১১%, অন্যান্য: ৮% ।
📉 প্রবৃদ্ধি ও চ্যালেঞ্জঃ ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ইসলামী ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি মাত্র ~০.৮% (এক বছরে ১১.৭১% থেকে), বিনিয়োগ বৃদ্ধিও ~৯.৯৬% – যা গত চার বছরে সর্বনিম্ন পর্যায় । গ্রাহকের আস্থা হ্রাস, শাসনতান্ত্রিক সংকট, আর্থিক স্ক্যান্ডাল এবং শাসনব্যবস্থার সমস্যা এই প্রবৃদ্ধি কমানোর মূল কারণ ।
📊 বাজার অংশঃ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকিংয়ের আমানত মোট ব্যাংকিং সেক্টরে ২৪.৩৬% এবং বিনিয়োগে ২৮.৯৩% অংশীদারিত্ব বজায় ।
🏦 কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপঃ দুর্বল ও বিতর্কিত ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনে ফিউশন বা সংকট নিরসন আইন প্রস্তুতির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে । এছাড়াও Bangladesh ব্যাংকে একটি “ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স–২০২৫” প্রণয়নাধীন ।
✋ শাসন, স্বচ্ছতা ও পরিচালনাঃ অতীতে বিশেষ বিশেষ গ্রুপ ও করপোরেট সংস্থার দখলে এসে কিছু ব্যাংকের আর্থিক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে (যেমন: এস আলম গোষ্ঠী দ্বারা নিয়ন্ত্রণ); কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব বোর্ড ভেঙে পুনঃগঠন করেছে । এখনও কিছু ব্যাংকে পরিচালনাগত দুর্বলতা ও শ্রেণীকৃত বিনিয়োগ (non-performing investment) সমস্যা চিহ্নিত—যার ফলে প্রভিশন সংকট দেখা দিয়েছে ।
🔁 পুনরুদ্ধার ও ভবিষ্যৎঃ অনেক ব্যাংক, যেমন সামাজিক ইসলামী ব্যাংক, প্রথম সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইত্যাদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ফিরে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছে । নতুন শাসন কাঠামো ও নিয়ম অনুযায়ী বিনিয়োগ পুনরুদ্ধার ও লিকুইডিটি সার্বিকভাবে ঠিক রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
✅ সারমর্মঃ বিনিয়োগ ও আমানতের প্রবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় স্তিমিত। মার্কেট শেয়ার ২৫%-৩০% স্থায়ী, তথ্যভিত্তিক। সুশাসন ও স্বচ্ছতা উন্নতির চেষ্টা, তবে দুর্বল ও বিতর্কিত ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে ধাপে ধাপে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রূপরেখা (মার্জার ও রেজুলেশন আইন) খাতে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হতে পারে।
(সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক, জুন ২০২৫)
🧾 ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুফল
✅ নৈতিকতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাঃ ব্যবসা ও বিনিয়োগে প্রতারণা, জালিয়াতি ও মুনাফার অপব্যবহার ঠেকানো হয়।
✅ দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকাঃ মাইক্রো বিনিয়োগের মাধ্যমে গরিব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করা।
✅ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিঃ সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাংকিং সুবিধা সম্প্রসারণ।
✅ সামাজিক দায়বদ্ধতা ও জাকাতভিত্তিক অর্থনীতিঃ জাকাত ফান্ড ও সামাজিক বিনিয়োগের মাধ্যমে নৈতিক অর্থনীতি।
📉 আধুনিক অর্থনীতিতে ঈসলামী ব্যাংকের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
❗ চ্যালেঞ্জসমূহঃ দক্ষ শরিয়াহ বোর্ডের ঘাটতি, বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার চাপ, পর্যাপ্ত শরিয়াহ স্কলার ও প্রশিক্ষণের অভাব, আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সমন্বয় সমস্যাও এক চ্যালেঞ্জ। ১। সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার অভাব: ইসলামী ব্যাংকিং এখনো অনেক দেশে মূলধারার ব্যাংকিং হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি।
২। সুবিন্যস্ত আইনগত কাঠামোর অভাব: অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট ও কার্যকর আইন নেই।
৩। মানসম্পন্ন মানবসম্পদের ঘাটতি: শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল কম।
৪। সেন্ট্রাল ব্যাংকের সহযোগিতা সীমিত: আধুনিক মনেটারি পলিসির সঙ্গে শরিয়াহ নীতির সমন্বয়ে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
৫। প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের ঘাটতি: ডিজিটাল সেবা ও ফিনটেক খাতে পিছিয়ে থাকা অনেক ইসলামী ব্যাংকের দুর্বলতা।
✅ করণীয়ঃ শরিয়াহ স্কলারদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণায় বিনিয়োগ। শরিয়াহ ভিত্তিক ফিনটেক ও ডিজিটাল ইসলামী ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম। আইনগত কাঠামোর উন্নয়ন। আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের সহযোগিতা। ১। আন্তর্জাতিক মানে শরিয়াহ বোর্ড গঠন ও কার্যকর করা। ২। আইনি কাঠামো ও সরকারি নীতিতে ইসলামী ব্যাংকিং অন্তর্ভুক্ত করা। ৩। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা। ৪। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেবা সহজ ও গ্রাহকবান্ধব করা। ৫। সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সচেতনতা বৃদ্ধি।
➡️ সারসংক্ষেপে, আধুনিক অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো আইনগত কাঠামোর দুর্বলতা, জনবলের অদক্ষতা ও প্রযুক্তিগত পশ্চাৎপদতা। এসব মোকাবেলায় শিক্ষা, প্রযুক্তি ও নীতিনির্ধারণী সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
🌍আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি: অন্যান্য দেশের উদাহরণ
🇸🇦 সৌদি আরবঃ ইসলামী ব্যাংকিং সম্পদের ৬৫% শরিয়াহভিত্তিক। আল রাজী ইসলামী ব্যাংক, অন্যতম বৃহৎ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক।
আরো পড়ুনঃ
🇲🇾 মালয়েশিয়াঃ সেন্ট্রাল ব্যাংক (BNM) ইসলামী ব্যাংকিংকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। ইসলামী সুকুক বাজারে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয়।
🇦🇪 সংযুক্ত আরব আমিরাতঃ দুবাই ইসলামিক ব্যাংক অন্যতম পুরাতন ইসলামী ব্যাংক। ব্লকচেইনভিত্তিক শরিয়াহ কমপ্লায়েন্ট প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রগামী।
📡 ডিজিটাল যুগে ইসলামী ব্যাংক বিনিয়োগের ভবিষ্যৎ
ইসলামী ফিনটেক স্টার্টআপঃ ডিজিটাল ওয়ালেট, শরিয়াহভিত্তিক লেনদেন অ্যাপের চাহিদা বাড়ছে।ব্লকচেইন ও স্মার্ট কন্ট্রাক্টসঃ শরিয়াহ নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ স্বয়ংক্রিয় চুক্তিপদ্ধতি। AI ভিত্তিক শরিয়াহ বিশ্লেষণঃ বিনিয়োগ যাচাই করার ক্ষেত্রে এআই ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি।
ডিজিটাল যুগে ইসলামী ব্যাংকের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময়। প্রযুক্তির সহায়তায় ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা আরও সহজ, দ্রুত ও গ্রাহকবান্ধব হয়ে উঠছে। মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন লেনদেন, ব্লকচেইন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার ইসলামী ব্যাংককে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করে তুলছে। তাছাড়া, ফিনটেক সহযোগিতায় শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক সেবার পরিধিও বিস্তৃত হচ্ছে। তবে, নিরাপত্তা, শরিয়াহ সম্মত প্রযুক্তি উন্নয়ন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির দিকেও নজর দেওয়া জরুরি। সব মিলিয়ে, ডিজিটাল যুগে ইসলামী ব্যাংকিং বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি শক্তিশালী ও আধুনিক বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে।
✅ লেখকের চূড়ান্ত মতামতঃ আধুনিক অর্থনীতিতে ঈসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ-সম্মত বিনিয়োগের দিশা
আধুনিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সম্মত বিনিয়োগ পদ্ধতি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। নৈতিকতা, সামাজিক দায়িত্ব এবং স্থায়িত্বকে ভিত্তি করে পরিচালিত এই ব্যবস্থা ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের আর্থিক কাঠামোকে আরও টেকসই করে তুলছে।
প্রযুক্তির সহায়তায় ইসলামী ব্যাংকিংয়ের আগামীর পথচলা হবে আরও বিস্তৃত, কার্যকর এবং মানবিক।📢 👉 পাঠকদের প্রতি আহ্বানঃ আপনি কি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে আগ্রহী? আপনার মতামত বা প্রশ্ন আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url