ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার দিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট যে ভাবে হলেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার দিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট যে ভাবে হলেন
আপনারা সবাই আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে অনেক কিছু জানেন আমার অনেকেই জানেন না। তিনি একদিকে সমালোচিত অন্য দিকে বেশ জনপ্রিয়। তার সম্বন্ধে আপনার জানার অনেক কৌতুহল আছে। আমি আজকের এই নিবন্ধে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম সম্বন্ধে আলোচনা করব।
আপনি সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠ করুন। তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবেন। সবচেয়ে কৌতুহল বিষয় জানবেন যে তিনি দ্বিতীয়বারের মেয়াদে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কিভাবে প্রত্যাবর্তন করলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের প্রেসিডেন্ট হয়ে আমেরিকার ইতিহাস বদলে দিয়েছেন । সেজন্য আমাদের সাথেই থাকুন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার দিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট যে ভাবে হলেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প, একজন সফল ব্যবসায়ী এবং রিয়েল এস্টেট টাইকুন হিসেবে পরিচিত, প্রথমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ২০১৬ সালে। তাঁর নেতৃত্ব, মতাদর্শ ও রাজনৈতিক কৌশল সবসময়ই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হন, তবে তাঁর প্রভাব আমেরিকার রাজনীতিতে থেকেই গিয়েছিল। এরপর কীভাবে তিনি আবার ফিরে এসে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন, সেটাই এখন আলোচনা করছি।
১. পরাজয়ের পর ঘুরে দাঁড়ানোঃ ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ট্রাম্প সরাসরি হার মেনে নেননি। তিনি নির্বাচনকে “চুরি” হয়েছে বলে দাবি করেন এবং তাঁর সমর্থকরা ব্যাপক প্রতিবাদে অংশ নেয়। যদিও এই দাবি আদালত ও নির্বাচন কমিশন দ্বারা বারবার খারিজ হয়েছে, তবে ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের মাঝে একটি “অবিচার” অনুভূতি তৈরি করতে সক্ষম হন। এই আবেগই পরবর্তীতে তাঁর দ্বিতীয়বার প্রার্থিতার শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করে।
২. রিপাবলিকান পার্টির ওপর নিয়ন্ত্রণঃ পরাজয়ের পরেও ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে থেকে যান। অনেক কংগ্রেসম্যান ও সিনেটর তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য পার্টির প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রাম্প সহজেই মনোনয়ন পান, কারণ দলের ভেতরে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো শক্তিশালী কেউ ছিল না।
৪. নির্বাচনী কৌশল ও প্রচারণাঃ ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী কৌশল ও প্রচারণা
১. জনগণের আবেগকে কাজে লাগানোঃ ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে আমেরিকান জাতীয়তাবাদ, অভিবাসনবিরোধী মনোভাব, এবং “America First” নীতিকে তুলে ধরেন। এটি সাধারণ ভোটারদের আবেগে দারুণভাবে কাজ করে।
২. সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারঃ ট্রাম্প টুইটার, ট্রুথ সোশ্যালসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সরাসরি বার্তা ছড়ান। প্রচলিত গণমাধ্যমকে এড়িয়ে তিনি নিজেই নিজের প্রচার চালান।
৩. বক্তৃতা ও জনসভা (Rallies):ঃ তিনি বিশাল জনসভা আয়োজন করেন, যেখানে তিনি অনুগত ভোটারদের উজ্জীবিত করেন এবং সংবাদমাধ্যমের মনোযোগ কাড়েন।
৪. প্রচলিত রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থানঃ ট্রাম্প নিজেকে "আউটসাইডার" হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং রাজনীতিবিদদের ওপর জনঅসন্তোষকে পুঁজি করেন।
৫. সংক্ষিপ্ত ও প্রভাবশালী স্লোগানঃ “Make America Great Again”, “Build the Wall”, “Drain the Swamp” ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে তিনি সাধারণ মানুষের মন জয় করেন।
৬. মিডিয়াকে কৌশলে ব্যবহারঃ যদিও তিনি মিডিয়ার সমালোচনা করেন, তবুও তার বিতর্কিত মন্তব্যগুলো গণমাধ্যমে ব্যাপক কভারেজ পায়—যা প্রচারণার এক বিশাল অংশ হয়ে ওঠে।
৭. বিপক্ষকে আক্রমণাত্মক কৌশলে দমনঃ প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ, উপহাস ও কৌশলগত সমালোচনার মাধ্যমে তিনি তার অবস্থান মজবুত করেন।
৮. ডিজিটাল প্রচারণায় মোটা বিনিয়োগঃ ফেসবুক, ইউটিউবসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন ব্যবহার করেন। এই কৌশলগুলো মিলিয়ে ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা গড়ে তোলেন এবং ভোটারদের মনোযোগ কাড়েন।
৫. নীতিগত প্রতিশ্রুতিঃ ১. অভিবাসন নীতি: দক্ষিণ সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি (মেক্সিকো সীমান্তে)। অবৈধ অভিবাসন রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। “America First” নীতির অংশ হিসেবে অভিবাসনের হার হ্রাস। ২. অর্থনৈতিক নীতি: কর কমানো (বিশেষ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ধনীদের জন্য)। আমেরিকান শিল্প ও উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তির পুনঃমূল্যায়ন (যেমন: NAFTA থেকে বেরিয়ে নতুন USMCA)। ৩. স্বাস্থ্যনীতি: ওবামাকেয়ার (Affordable Care Act) বাতিল বা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি। বিকল্প স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রণয়ন। ৪. পররাষ্ট্রনীতি: ন্যাটো ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক জোটে আমেরিকার ব্যয়ের পরিমাণ কমানোর প্রতিশ্রুতি। চীন ও ইরানের সঙ্গে কঠোর বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নীতি গ্রহণ। মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক হস্তক্ষেপ হ্রাস।
৬. বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতা কাজে লাগানোঃ ট্রাম্প সফলভাবে বাইডেন প্রশাসনের দুর্বলতা যেমন, অর্থনৈতিক মন্দা, সীমান্ত সংকট, বিদেশে আমেরিকার অবস্থান দুর্বল হওয়া ইত্যাদিকে ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেন। তাঁর প্রচারাভিযানে এসব বিষয় ছিল মূল অস্ত্র।
৭. ভোটারদের পুনঃআস্থা অর্জন: ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের কোন আস্থা অর্জন করেন এবং এইভাবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ শৈশব ও কৈশোর
ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্প ও মা মেরি ট্রাম্পের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন চঞ্চল ও আত্মবিশ্বাসী স্বভাবের। শৃঙ্খলার অভাবে তাকে ১৩ বছর বয়সে নিউইয়র্ক মিলিটারি একাডেমিতে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি নেতৃত্বগুণ ও কঠোর অনুশাসনের মধ্যে বড় হতে শিখেন। কৈশোরেই তিনি ব্যবসা ও প্রতিযোগিতার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন, যা পরবর্তীতে তার ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
আরো পড়ুনঃ
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ শিক্ষাজীবন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিক্ষাজীবন ছিল বেশ বৈচিত্র্যময় এবং তার ব্যক্তিত্ব ও ভবিষ্যৎ জীবনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল। নিচে তার শিক্ষাজীবনের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা:
ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন, নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্সে। তিনি প্রথমে নিউ ইয়র্কের কিউ-ফরেস্ট স্কুল (Kew-Forest School)-এ পড়াশোনা করেন। তবে, শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং আচরণগত কারণে তার পরিবার তাকে ১৩ বছর বয়সে নিউ ইয়র্ক মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে (New York Military Academy - NYMA) ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানে তিনি ৮ম গ্রেড থেকে ১২তম গ্রেড পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এই সামরিক স্কুলের কঠোর শৃঙ্খলা এবং কাঠামোবদ্ধ পরিবেশ ট্রাম্পের ব্যক্তিত্বে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বগুণ এবং প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা:
ট্রাম্পের উচ্চশিক্ষা শুরু হয় ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটি (Fordham University) থেকে ১৯৬৪ সালে। সেখানে তিনি দুই বছর পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি স্থানান্তরিত হন পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্টন স্কুল অব বিজনেসে (Wharton School of the University of Pennsylvania), যেটি ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৮ সালে তিনি অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি (Bachelor of Science in Economics) অর্জন করেন।
ওয়ার্টন স্কুলে পড়াশোনা করার সময় তিনি তার পিতার কাছ থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা লাভ করেন, যা পরবর্তীকালে তার ব্যবসায়িক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সারসংক্ষেপ:ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিক্ষাজীবন ছিল শৃঙ্খলাপূর্ণ, কাঠামোবদ্ধ এবং ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে গঠিত। সামরিক স্কুল এবং ওয়ার্টন বিজনেস স্কুলে তার শিক্ষা ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ জীবন-কাহিনী
ডোনাল্ড জন ট্রাম্প ১৪ জুন ১৯৪৬ সালে নিউইয়র্ক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন মার্কিন ব্যবসায়ী, টিভি ব্যক্তিত্ব এবং রাজনীতিবিদ। তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্প ছিলেন একজন সফল রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, যিনি নিউইয়র্ক শহরে আবাসন নির্মাণ করতেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ারটন স্কুল থেকে ইকোনমিক্সে ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি পারিবারিক ব্যবসা "The Trump Organization" পরিচালনা শুরু করেন এবং নানা বড় বড় রিয়েল এস্টেট প্রকল্পে কাজ করে প্রচুর খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি অনেক বিলাসবহুল হোটেল, ক্যাসিনো ও গগনচুম্বী ভবন নির্মাণ করেন।
টেলিভিশনে “The Apprentice” শো-এর মাধ্যমে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ২০১৬ সালে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
তার রাজনীতিতে আগমন, ব্যতিক্রমী নেতৃত্বশৈলী এবং বিতর্কিত বক্তব্য তাকে বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে। তিনি একজন প্রভাবশালী ও আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ ব্যবসায়ী জীবন ও ক্যারিয়ার
শিক্ষা শেষে ট্রাম্প ‘The Trump Organization’-এ যোগ দেন এবং ধীরে ধীরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটিতে একাধিক উচ্চমূল্যের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হন, যেমন ট্রাম্প টাওয়ার, ট্রাম্প হোটেলস, ক্যাসিনো ইত্যাদি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ মিডিয়া ও জনপ্রিয়তা
ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবেও সুপরিচিত। ১৯৮০-এর দশক থেকেই তিনি বিভিন্ন টিভি শো, ম্যাগাজিন এবং সংবাদপত্রে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি শো "The Apprentice" তাকে সাধারণ মানুষের মাঝে বিশাল জনপ্রিয়তা এনে দেয়। মিডিয়ায় তার উপস্থিতি, সাহসী মন্তব্য, বিতর্কিত অবস্থান এবং অনন্য স্টাইল তাকে নিয়মিত শিরোনামে রাখে। সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে টুইটারে, তিনি ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয়, যা তাকে আরও জনসংযোগ করতে সাহায্য করে। ট্রাম্পের এই মিডিয়া দক্ষতাই তাকে রাজনীতিতে দ্রুত জনপ্রিয় করে তোলে এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে সাহায্য করে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ রাজনীতিতে আগমন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনীতিতে আগমন ঘটে ২০১৫ সালে, যখন তিনি রিপাবলিকান পার্টির হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। তার আগেই তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সরাসরি, বিতর্কিত ও আগ্রাসী বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই জয় ছিল আমেরিকার রাজনীতিতে এক বড় ধরণের পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ দ্বিতীয় মেয়াদ: রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন
প্রথম পরাজয়ের পরেও ট্রাম্প রাজনীতি থেকে সরে যাননি। তিনি বিভিন্ন সমাবেশ, বক্তব্য ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ রাখেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি আবারও রিপাবলিকান দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জো বাইডেনকে পরাজিত করে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ প্রথম প্রেসিডেন্সি (২০১৭–২০২১)
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্সি (২০১৭-২০২১) ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বিতর্কিত ও আলোচিত সময়। তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট হন। তার প্রশাসনের প্রধান নীতিগুলোর মধ্যে ছিল কর হ্রাস, ইমিগ্রেশন নিয়ন্ত্রণ, "আমেরিকা ফার্স্ট" নীতি, ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনা।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন এবং ন্যাটো ও জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় তার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
আরো পড়ুনঃ
২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হন, কিন্তু ফলাফল মানতে অস্বীকৃতি জানান। এর ফলস্বরূপ ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে তার সমর্থকদের হামলা ঘটে, যা আমেরিকার গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব ঘটনা।
দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি ‘America First’ নীতিকে আরও জোরদার করেন, চীন ও রাশিয়ার সাথে কৌশলগত সম্পর্ক, অভিবাসন কঠোরকরণ এবং প্রযুক্তি ও সামরিক খাতে স্বনির্ভরতার উপর জোর দেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ ব্যক্তিগত জীবন
ট্রাম্পের ব্যক্তিগত জীবনও আলোচনার বিষয়। তিনি তিনবার বিয়ে করেছেন—ইভানা ট্রাম্প, মারলা ম্যাপলস এবং মেলানিয়া ট্রাম্প। তার পাঁচ সন্তান রয়েছে—ডোনাল্ড জুনিয়র, ইভানকা, এরিক, টিফানি এবং ব্যারন। ইভানকা ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে একজন উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ সমালোচনা ও বিতর্ক
ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভাষা, ব্যক্তিত্ব এবং সিদ্ধান্ত প্রায়শই সমালোচিত হয়েছে। তিনি মিডিয়াকে “Fake News” বলে অভিহিত করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন নীতির বিরুদ্ধে গেছেন এবং জাতিগত বিভাজনের অভিযোগও পেয়েছেন। তবে তার সমর্থকদের মতে, তিনি ছিলেন একজন "আসল" নেতা, যিনি রাজনৈতিক শুদ্ধতার বাইরে গিয়ে জনগণের কণ্ঠস্বর তুলে ধরেছেন।
লেখকের শেষ মন্তব্যঃ ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার দিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট যে ভাবে হলেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন অসাধারণ চরিত্র—একদিকে সফল ব্যবসায়ী, অন্যদিকে একজন বিতর্কিত কিন্তু জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই প্রেরণাদায়ক, শিক্ষণীয় ও বিশ্লেষণযোগ্য। দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ভূমিকা কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলবে।
এতক্ষন আমি ডোনাল্ড ট্রাম্প যিনি বর্তমানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তার সম্বন্ধে আলোচনা করেছি। আপনারা আমাদের সাথে ছিলেন এজন্য ধন্যবাদ। আপনি আরো নতুন নতুন কনটেন্ট পেতে হলে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখে থাকি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url