ব্লাক কফি কি, ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা

 ব্লাক কফি কি,  ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা

 নিচে আপনার অনুল্লিখিত বিষয় অনুযায়ী একটি , তথ্যভিত্তিক এবং সর্বশেষ পরিসংখ্যান সাপেক্ষ  আর্টিকেল দেওয়া হলো। এতে “ব্ল্যাক কফি” কী, এর উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।



ব্ল্যাক কফি সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অধ্যয়ন করুন এবং পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করে নিজের ব্যক্তি জীবন এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাজে সাহায্য করুন। তাদের সাথেই থাকুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ  ব্লাক কফি কি,  ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা

🔹ব্লাক কফি কি,  ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা
🔹 ব্ল্যাক কফি কী, ব্ল্যাক কফির বৈশিষ্ট্য
🔹 ব্ল্যাক কফি কী, ব্ল্যাক কফির উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক তথ্য
🔹 ব্ল্যাক কফির উপকারিতা (Benefits of Black Coffee)
🔹 ব্লাক কফি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক
🔹 ব্ল্যাক কফির বৈজ্ঞানিক সতর্কতা
🔹 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ব্লাক কফির ভূমিকা
 🔹ব্লাক কফি  লিভার সুরক্ষা ও ক্যান্সার ঝুঁকি হ্রাস করে
 🔹ওজন কমাতে ব্লাক কফির ভূমিকা
 🔹ব্লাক কফি শারীরিক কর্মক্ষমতা ও মস্তিষ্ক সচেতনতা উন্নয়ন করে
 🔹 ব্ল্যাক কফি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ হ্রাস করে
 🔹 কফি হৃদরোগ ও রক্তচাপ কমায়
 🔹ব্লাক কফির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা
 🔹ব্লাক কফি আজকাল এত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কেন
 🔹আমাদের শেষ মতামতঃ ব্লাক কফি কি, ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা

✅ ব্লাক কফি কি, ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা 

☕ব্ল্যাক কফি কি: ব্ল্যাক কফি হলো এমন এক ধরনের কফি যেখানে দুধ, চিনি, ক্রিম বা কোনো মিষ্টি উপাদান মেশানো হয় না। এটি শুধুমাত্র কফি বিন থেকে তৈরি করা হয়। এজন্য এর স্বাদ কিছুটা তেতো হলেও এটি স্বাস্থ্যকর হিসেবে পরিচিত। অনেকে একে **"পিউর কফি"**ও বলে থাকেন।
আরো পড়ুনঃ
✅ ব্ল্যাক কফির উপকারিতাঃ ১।  ওজন কমাতে সাহায্য করে – ব্ল্যাক কফিতে ক্যালোরি কম এবং মেটাবলিজম বাড়ায়, যা ফ্যাট বার্নে সহায়ক। ২। শক্তি বৃদ্ধি করে – এতে থাকা ক্যাফেইন শরীরকে চনমনে করে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ায়। ৩। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় – নিয়মিত ও পরিমাণমতো ব্ল্যাক কফি সেবন হৃদযন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ৪।  মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখে – এটি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং আলঝেইমার বা পারকিনসন্স রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। ৫।ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক – গবেষণা অনুযায়ী, ব্ল্যাক কফি ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। ৬। লিভারকে সুরক্ষা দেয় – বিশেষ করে সিরোসিস ও ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি হ্রাস করে। ৭। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ – শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

 ব্ল্যাক কফির অপকারিতাঃ ১।  অতিরিক্ত সেবনে অনিদ্রা হতে পারে – এতে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। ২।  পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে – অতিরিক্ত ব্ল্যাক কফি অ্যাসিডিটি, গ্যাস বা আলসার তৈরি করতে পারে। ৩। হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে – বেশি পরিমাণে সেবনে হার্টবিট দ্রুত হতে পারে। ৪। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হতে পারে – অতিরিক্ত কফি হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ৫। ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে – অতিরিক্ত ক্যাফেইন স্নায়বিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। 
👉 সুতরাং, প্রতিদিন ১-২ কাপ ব্ল্যাক কফি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে অতিরিক্ত পান করলে এটি ক্ষতির কারণও হতে পারে।

 ব্ল্যাক কফি কী, ব্ল্যাক কফির বৈশিষ্ট্য

ব্ল্যাক কফি কিঃ ব্ল্যাক কফি হলো এমন এক ধরনের কফি যেখানে দুধ, চিনি, ক্রীম বা অন্য কোনো উপাদান মেশানো হয় না। এটি শুধু কফি বিন (Coffee beans) দিয়ে তৈরি হয়। সাধারণত কফি বিন ভেজে (roasted) গুঁড়ো করে গরম পানির সাথে মিশিয়ে ব্ল্যাক কফি বানানো হয়। 👉 এক কথায়, ব্ল্যাক কফি = কফি + পানি (কোনো দুধ বা চিনি ছাড়া)।

ব্ল্যাক কফির বৈশিষ্ট্যঃ  স্বাদ তুলনামূলক তিক্ত ও গাঢ়। এতে ক্যালোরি খুবই কম থাকে (যদি চিনি বা দুধ না মেশানো হয়)। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ব্ল্যাক কফি মূলত এনার্জি ও সতেজতা দেওয়ার জন্য জনপ্রিয়। ব্ল্যাক কফি হলো সেই কফি যা শুধুমাত্র কফি বিন বা গুঁড়ো এবং গরম পানিতে প্রস্তুত করা হয়, কোনো চিনি, দুধ, ক্রীম বা অন্য কোনো সংযোজন ছাড়া। এর স্বাদ সাধারণত তীব্র ও গাঢ় হয়, কারণ এতে উপরোক্ত মিশ্রণ নেই । ৮ আউন্স (প্রায় ২৪০ মিলিলিটার) ব্ল্যাক কফিতে প্রায় ২ ক্যালোরি থাকে, যা এটি একটি প্রান্তিকভাবে নিম্ন ক্যালোরিযুক্ত পানীয় করে তোলে । 

  ব্ল্যাক কফি কী,  ব্ল্যাক কফির উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক তথ্য

১. দীর্ঘায়ু (Longevity) বৃদ্ধিঃ এক কাপ ব্ল্যাক কফি প্রতিদিন মৃত্যুহারের (all-cause mortality) ঝুঁকি ~১৬-১৭% কমায়। Tufts-এর Journal of Nutrition-এ ৪৬,০০০ জনের ওপর ১৯৯৯–২০১৮ সময়কালে করা একটি গবেষণায় দেখা যায় ১-২ কাপ ব্ল্যাক কফি দৈনিক মৃত্যুহার ১৬% কমিয়ে, ২-৩ কাপ হলে ১৭% কমে । BMJ-এর বিশাল বিশ্লেষণ অনুযায়ী কফি পানকারীরা সাধারণ মৃত্যুহারে ১৭% কম ঝুঁকিতে, হৃদরোগে ১৯% এবং ক্যান্সারে ১৮% কম ঝুঁকিতে থাকেন । 

ব্ল্যাক কফি (Black Coffee) হলো দুধ, চিনি বা ক্রিম ছাড়া তৈরি কফি। এটি কেবলমাত্র পানি ও কফি বিন থেকে প্রস্তুত হয়। পুষ্টিগুণে ভরপুর ব্ল্যাক কফি পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়। প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে পান করলে এটি শরীর ও মস্তিষ্ক উভয়ের জন্যই উপকারী। নিচে এর বিস্তারিত উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক তথ্য তুলে ধরা হলোঃ 

🔹 ব্ল্যাক কফির পুষ্টিগুণ (Scientific Nutrition Facts)ঃ প্রতি ১ কাপ (২৪০ মি.লি.) ব্ল্যাক কফি থেকে পাওয়া যায়ঃ ক্যালোরি: প্রায় ২-৫ ক্যালোরি, ফ্যাট: ০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট: ০ গ্রাম, প্রোটিন: ০.৩ গ্রাম, ক্যাফেইন: ৯৫-১০০ মি.গ্রা., খনিজ: ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম সামান্য পরিমাণে। 

 ব্ল্যাক কফির উপকারিতা (Benefits of Black Coffee)

১. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ ব্ল্যাক কফি মেটাবলিজম ১১% পর্যন্ত বাড়াতে পারে (Harvard Medical School, 2023)। এটি ফ্যাট সেল ভেঙে শক্তিতে রূপান্তর করতে সহায়তা করে। 

২. শক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি করেঃ ক্যাফেইন মস্তিষ্কের অ্যাডেনোসিন রিসেপ্টর ব্লক করে, ফলে ক্লান্তি কমায়। গবেষণা অনুযায়ী, ব্ল্যাক কফি মনোযোগ, একাগ্রতা ও সতর্কতা বৃদ্ধি করে। 

৩. টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় American Diabetes Association-এর গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত ব্ল্যাক কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ২৩-৫০% কমে।

৪. লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করে । কফি লিভারের সিরোসিস, ফ্যাটি লিভার এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। 

৪ কাপ কফি প্রতিদিন গ্রহণ করলে লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি ৮০% পর্যন্ত কমে (Liver International Journal, 2021)। 

✅ ব্লাক কফি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক

সঠিক পরিমাণে ব্ল্যাক কফি পান করলে হার্ট ফেইলিওরের ঝুঁকি কমে। American Heart Association জানায়, দিনে ১–২ কাপ ব্ল্যাক কফি হৃদযন্ত্রকে সক্রিয় রাখে।

৬. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়ক্যাফেইন স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, ফলে স্মৃতিশক্তি ও কগনিটিভ ফাংশন উন্নত হয়। Alzheimer’s ও Parkinson’s রোগের ঝুঁকি ৬৫% পর্যন্ত কমাতে পারে।

৭. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেWorld Health Organization (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, ব্ল্যাক কফি পান করলে কোলন, ব্রেস্ট ও লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

৮. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধব্ল্যাক কফিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা কোষের ক্ষতি রোধ করে ও বার্ধক্য বিলম্বিত করে।

৯. ডিপ্রেশন ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে Harvard School of Public Health-এর গবেষণা অনুযায়ী, যারা প্রতিদিন ২–৪ কাপ ব্ল্যাক কফি পান করেন তাদের ডিপ্রেশনের ঝুঁকি ২০% কম।

১০. ব্যায়ামের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ  ব্ল্যাক কফি শরীরের অ্যাড্রেনালিন লেভেল বাড়ায়, ফলে জিম বা ব্যায়ামের সময় কর্মক্ষমতা বাড়ে। খেলোয়াড়রা সাধারণত ওয়ার্কআউটের আগে ব্ল্যাক কফি পান করেন।

 ব্ল্যাক কফির বৈজ্ঞানিক সতর্কতা

যদিও ব্ল্যাক কফির অনেক উপকারিতা আছে, তবে অতিরিক্ত পান করলে কিছু সমস্যা হতে পারেঃ অতিরিক্ত ক্যাফেইন অনিদ্রা, উদ্বেগ ও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। দিনে ৩–৪ কাপের বেশি পান না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। খালি পেটে পান করলে অম্লতা ও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।  ব্ল্যাক কফি হলো এক অসাধারণ প্রাকৃতিক পানীয় যা ওজন কমানো, লিভার রক্ষা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তবে সঠিক পরিমাণে ও সঠিক সময়ে পান করাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

✅ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ব্লাক কফির ভূমিকা

২. টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোঃ প্রায় ৩-৪ কাপ কফি প্রতিদিন টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৯-১১ % বা তার বেশি পর্যন্ত কমাতে পারে। এক মিলিয়নের বেশি অংশগ্রহণকারী নিয়ে করা একটি বিশ্লেষণ অনুযায়ী প্রতিটি অতিরিক্ত কাপ (২৩৪ মিলি) কফি ৯% (ক্যাফেইন যুক্ত) এবং ৬% (ডিক্যাফ) ঝুঁকি কমিয়ে । অন্য একটি পর্যালোচনায় ৩-৪ কাপ পান করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২৫-৩০% কমে । 

  ব্লাক কফি  লিভার সুরক্ষা ও ক্যান্সার ঝুঁকি হ্রাস করে

৩. লিভার সুরক্ষা ও ক্যান্সার ঝুঁকি হ্রাসঃ  লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিতে পারে। Healthline-এ উল্লেখ করা হয়েছে ব্ল্যাক কফি লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারে ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক । Times of India অনুসারে, এক গবেষণায় লিভার ক্যান্সার ঝুঁকি ~৪০% কমেছে এবং স্তন ক্যান্সার ও অন্যান্য ক্যান্সার নিয়েও ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে । স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো—ডেইলি ৩-৪ কাপ কফি স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে ।

 ✅ ওজন কমাতে ব্লাক কফির ভূমিকা

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ ও মেটাবলিজম বৃদ্ধিঃ ব্ল্যাক কফি মেটাবলিক রেট বৃদ্ধি এবং ওজন কমাতে সহায়ক। এটি ক্ষুধা কমায়, চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে । “Coffee Diet” ডায়েট পরিকল্পনায় প্রতিদিন ৩ কাপ ব্ল্যাক কফি অতিথিতে করে শরীরের ফ্যাট ~৪% পর্যন্ত কমাতে পারে ।

   ব্ল্যাক কফি শারীরিক কর্মক্ষমতা ও মস্তিষ্ক সচেতনতা উন্নয়ন করে

৫. শারীরিক কর্মক্ষমতা ও মস্তিষ্ক সচেতনতা উন্নয়নঃ ক্যাফেইন শারীরিক কর্মক্ষমতা ও শক্তি বৃদ্ধি করে—ত্বরা, শক্তি, স্টামিনা এবং কার্ডিও পারফরম্যান্সে উন্নতি সম্ভব ।  মস্তিষ্কের ফোকাস, স্মৃতি, মানসিক সতর্কতা বৃদ্ধি—উদাহরণস্বরূপ, উদ্বিগ্ন সময় বা কর্মে বেশি মনোযোগে সহায়তা করে । 

 ব্ল্যাক কফি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ হ্রাস করে

৬. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ হ্রাসঃ ব্ল্যাক কফি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ—যা প্রদাহ কমায় এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমায় । দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ (যেমন ওবেসিটি, মেটাবলিক সিন্ড্রোম, টাইপ ২ ডায়াবেটিস) থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে । 

  ব্ল্যাক কফি হৃদরোগ ও রক্তচাপ কমায়

৭. হৃদরোগ ও রক্তচাপঃ হৃদরোগগত ঝুঁকি কমানো—কফি পানকারীরা হৃদরোগে এবং মৃত্যুহারে কম ঝুঁকিতে থাকেন । রক্তচাপ—মোটামুটি স্তরের কফি (১-২ কাপ) রক্তচাপে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে না, বরং ৩-৭ কাপ পর্যন্ত প্রতিদিন দীর্ঘমেয়াদি কম ঝুঁকি দেখায় । ব্ল্যাক কফির অপকারিতা ও সতর্কতা। 

  ব্লাক কফির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা

১. অতিরিক্ত ক্যাফেইনের নেতিবাচক প্রভাবঃ অতিরিক্ত ক্যাফেইন (৪০০ মিগ্রি/দিনের বেশি) → উদ্বেগ, অনিদ্রা, চঞ্চলতা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, মাথাব্যথা, তৃষ্ণা, অবসাদ । সুরক্ষিত দৈনিক ক্যাফেইনের মাত্রা: সাধারণ প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ~৪০০ মিগ্রি (৪ কাপ কফি), গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী—প্রায় ২০০ মিগ্রি । 

২. পেটে সমস্যা ও অ্যাসিড উপসর্গঃ খালি পেটে ব্ল্যাক কফি পেলে অ্যাসিডিটি, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, পেটের সমস্যা হতে পারে । 

৩. দুর্বল ঘুম ও উদ্বেগঃ  সন্ধ্যার পরে কফি অনিদ্রা ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে; এমনকি রাতের ৬ ঘণ্টা আগে নেওয়া হলেও প্রভাব পড়তে পারে । 

৪. গর্ভাবস্থায় ঝুঁকিঃ  দু’টি বা তার অধিক কাপ কফি গর্ভ পতনের ঝুঁকি ~৮%, ৪-৭ কাপ হলে ~৮০% পর্যন্ত বাড়ে । 

৫. অন্যান্য সমস্যা (যেমন অস্থিরতা, হাড়ের ক্ষয়, নির্দিষ্ট ড্রাগ‐ইন্টার‌্যাকশন)ঃ স্থূলতা, অতিরিক্ত কফি পান করলে অস্থিরতা, কম নিদ্রা এবং ক্ষত বিশেষ করে ধাতুর শোষণ কমাতে পারে । ফিল্টার ছাড়া কফি (যেমন ফ্রেঞ্চ প্রেস, টর্কিশ কফি) → উচ্চ কোলেস্টেরল (cafestol, kahweol এর কারণে) । 

 ব্ল্যাক কফি আজকাল এত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কেন

ব্ল্যাক কফি আজকাল এত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এর পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। এর মূল কারণগুলো হলোঃ 

আরো পড়ুনঃ

১. স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ ব্ল্যাক কফিতে চিনি, দুধ বা ক্রিম মেশানো হয় না বলে এটি তুলনামূলক কম ক্যালরিযুক্ত। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যাফেইন এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত সঠিক মাত্রায় পান করলে ডায়াবেটিস, লিভার ডিজিজ এবং হার্টের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে পারে। 

২. ওজন কমানোর সহায়কঃ ব্ল্যাক কফি মেটাবলিজম বাড়ায়, ফলে ক্যালরি দ্রুত পোড়ে। যারা ডায়েট করছেন বা ফিটনেস মেইনটেইন করতে চান তাদের কাছে এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

৩. এনার্জি ও মানসিক সতেজতাঃ ক্যাফেইন মস্তিষ্কে স্টিমুল্যান্ট হিসেবে কাজ করে, ক্লান্তি দূর করে সতেজ অনুভূতি দেয়। মনোযোগ ও কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়, বিশেষ করে পড়াশোনা বা অফিসের কাজে। 

৪. লাইফস্টাইল ও ট্রেন্ডঃ অনেক দেশে ব্ল্যাক কফি "হেলদি ড্রিঙ্ক" হিসেবে ফ্যাশন ও লাইফস্টাইলের অংশ হয়ে গেছে। কফিশপ কালচার ছড়িয়ে পড়ায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবে তরুণরা ব্ল্যাক কফির দিকে বেশি ঝুঁকছে। 

৫. সহজ প্রাপ্যতা ও বৈচিত্র্যঃ আগে কফি অনেকটা বিলাসী পানীয় ছিল, কিন্তু এখন সুপারশপ থেকে শুরু করে ছোট ক্যাফেতেও সহজে পাওয়া যাচ্ছে। ব্ল্যাক কফির ভিন্ন ভিন্ন ধরনের (Espresso, Americano ইত্যাদি) স্বাদ মানুষকে আকর্ষণ করছে। 👉 সংক্ষেপে বললে, স্বাস্থ্য উপকারিতা, ওজন নিয়ন্ত্রণ, মানসিক সতেজতা, ফিটনেস ট্রেন্ড এবং আধুনিক লাইফস্টাইলের অংশ হয়ে ওঠা—এই সব কারণেই ব্ল্যাক কফি এত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

আমাদের শেষ মতামতঃ ব্লাক কফি কি, ব্লাক কফির উপকারিতা ও অপকারিতা  

ব্ল্যাক কফি                                                 সুমিত মাত্রায় উপকারী

দীর্ঘায়ু বৃদ্ধি, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও লিভার ক্যান্সার ঝুঁকি হ্রাস, মেটাবলিজম ও ওজন নিয়ন্ত্রণ, শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা উন্নত, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্যাকেট, হৃদরোগ ঝুঁকি কমানো। 

কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণঃ উদ্বেগ, অনিদ্রা, হার্ট জ্বর, অস্থিরতা, গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি, অ্যাসিডিটি, উচ্চ কোলেস্টেরল (ফিল্টার ছাড়া কফিতে) ইত্যাদি। 

সুপারিশঃ ১–৩ কাপ ব্ল্যাক কফি প্রতিদিন—সর্বোপরি নিরাপদ ও উপকারী । খালি পেটে না খাওয়া, সন্ধ্যায় কফি এড়িয়ে চলা, গর্ভবতী হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া—এসব গুরুত্বপূর্ণ।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url