ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন

 ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন 

নিচে আপনাদের  নিকট “ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন” বিষয়ে  একটি বিস্তারিত, স্বাস্থ্যসম্মত ও বাস্তবধর্মী বাংলা আর্টিকেল দেওয়া হলো। এখানে অতিরিক্ত ডায়েট বা ক্ষতিকর উপায় নয়

, বরং নিরাপদ ও দীর্ঘমেয়াদে কাজ করে এমন পদ্ধতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে—বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের জন্যও যেন এটি নিরাপদ থাকে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন 
ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন 
 ওজন বাড়ার কারণ
ওজন কমানোর মূলনীতি
ডায়েট মানে কী
১ গ্লাস কুসুম গরম পানি + লেবু
 কোন খাবারগুলো খাবেন
যে সব খাবার এড়াবেন
যে ভুলগুলো করবেন না
কত দিনে ওজন কমে
আমাদের শেষ কথাঃ ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন 

 ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন

বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত ওজন একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। তবে ওজন কমানো মানেই না খেয়ে থাকা বা কঠোর ডায়েট নয়। সঠিক খাবার নির্বাচন, পরিমিত পরিমাণে খাওয়া এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই হলো সুস্থভাবে ওজন কমানোর মূল চাবিকাঠি। 

এই আর্টিকেলে আমরা জানব কীভাবে নিরাপদ ও কার্যকর উপায়ে ডায়েট করে ওজন কমানো যায়।  বিশেষ দ্রষ্টব্য: আপনি যদি কিশোর/কিশোরী হন বা কোনো শারীরিক অসুস্থতা থাকে, তাহলে ডায়েট শুরু করার আগে অভিভাবক ও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

 ওজন বাড়ার কারণ

ওজন বাড়ার পেছনে কিছু সাধারণ কারণ হলোঃ অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ও সফট ড্রিঙ্কস, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, অনিয়মিত ঘুম, মানসিক চাপ,হরমোনজনিত সমস্যা, এই কারণগুলো বুঝলে ডায়েট পরিকল্পনা করা সহজ হয়।

 ওজন কমানোর মূলনীতি

ওজন কমাতে হলে শরীরে ক্যালোরি ঘাটতি (Calorie Deficit) তৈরি করতে হয়। অর্থাৎ  আপনি যত ক্যালোরি খাবেন, তার চেয়ে বেশি ক্যালোরি খরচ করতে হবে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে শরীরকে না খাইয়ে রাখা যাবে না। বরং: পুষ্টিকর খাবার, সঠিক পরিমাণ, নিয়মিত সময়ে খাওয়া,  এই তিনটি বিষয় মানতে হবে।

 ডায়েট মানে কী

ডায়েট মানে শুধু কম খাওয়া নয়। ডায়েট মানে হলো: সঠিক খাবার নির্বাচন,  সঠিক সময়ে খাওয়া,  সঠিক পরিমাণে খাওয়া,  দীর্ঘদিন ধরে মেনে চলা যায় এমন খাদ্যাভ্যাস, ওজন কমানোর জন্য ডায়েট চার্ট (উদাহরণ)।  সকাল (খালি পেটে)

১ গ্লাস কুসুম গরম পানি + লেবু

অথবা ১ গ্লাস পানি,  নাস্তা, ২টি সেদ্ধ ডিম / ডাল ভাজা, ১–২টি আটার রুটি বা ওটস। শাকসবজি, ১ কাপ চিনি ছাড়া চা/দুধ,  মিড-মর্নিং, ১টি ফল (আপেল/কমলা/পেয়ারা)।  দুপুরের খাবারঃ  ১ কাপ ভাত বা ২টি রুটি, ডাল, সবজি, মাছ/চিকেন (ভাজা নয়)। সালাদ,  বিকেলের নাস্তা।

 গ্রিন টি / লেবু চা, অল্প কিছু বাদাম বা ছোলা।  রাতের খাবার (হালকা)ঃ সবজি, স্যুপ / ১টি রুটি, প্রোটিন (ডিম/মাছ)।   ঘুমানোর আগে। চাইলে ১ কাপ হালকা গরম দুধ

 কোন খাবারগুলো খাবেন

ওজন কমাতে সাহায্য করে এমন খাবার, শাকসবজি, লাউ, শসা, পেঁপে, পালং শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি। ফলমূল, আপেল, পেয়ারা, কমলা, পেঁপে, বেরি,  প্রোটিন, ডিম, মাছ, চিকেন, ডাল, ছোলা, দই,  সম্পূর্ণ শস্য। লাল চাল, আটার রুটি, ওটস,  স্বাস্থ্যকর চ, অল্প অলিভ অয়েল, বাদাম, বীজ

যে সব খাবার এড়াবেন

ওজন কমাতে চাইলে এড়িয়ে চলুনঃ  ফাস্টফুড (বার্গার, পিজা), ভাজাপোড়া, সফট ড্রিঙ্কস, অতিরিক্ত মিষ্টি। প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত তেল ও চিনি,  পানি পানের গুরুত্ব। দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি  ডায়েটের সাথে ব্যায়াম কেন জরুরি।

শুধু ডায়েট নয়, হালকা ব্যায়ামও দরকারঃ প্রতিদিন ৩০–৪৫ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, হালকা যোগব্যায়াম, ব্যায়াম ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীরকে ফিট রাখে।  ঘুম ও মানসিক চাপ, প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম। মানসিক চাপ কমানো, কারণ কম ঘুম ও বেশি স্ট্রেসে ওজন বাড়ে।

 যে ভুলগুলো করবেন না

 না খেয়ে থাকা, খুব কম ক্যালোরি ডায়েট,  শুধু এক ধরনের খাবার খাওয়া,  ওজন কমানোর ওষুধ,  সোশ্যাল মিডিয়ার “ফ্যাড ডায়েট”। এসব শরীরের ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে কিশোরদের ক্ষেত্রে। কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ। 

আপনার বয়স যদি ১৩–১৭ হয়ঃ  ওজন কমানোর চেয়ে সুস্থ থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।  শরীর এখনো বেড়ে ওঠে,  তাই খুব কঠোর ডায়েট নয়।  জাঙ্ক ফুড কমিয়ে, ঘরে তৈরি খাবার খান।  খেলাধুলা ও ব্যায়াম করুন।  অবশ্যই অভিভাবক ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন

 কত দিনে ওজন কমে

স্বাস্থ্যসম্মতভাবেঃ  সপ্তাহে ০.৫–১ কেজি কমানোই নিরাপদ। এর বেশি কমাতে গেলে শরীর দুর্বল হতে পারে।  প্রাকৃতিক টিপস, ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান, ছোট প্লেটে খাবার নিন, রাতে দেরি করে খাবেন না। প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খান। 

নিজের অগ্রগতি লিখে রাখুন,  ডায়েট নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন,  ভাত ছাড়া যাবে। না, পরিমাণ কমিয়ে খাওয়াই ভালো।  রাতে খাওয়া বন্ধ না, হালকা খাবার খান।  শুধু ফল খেলে হবে। না, এতে পুষ্টির ঘাটতি হয়।

আমাদের শেষ কথাঃ ওজন কমানোর জন্য কিভাবে ডায়েট করবেন 

ওজন কমানো কোনো জাদু নয়। এটি একটি ধৈর্য ও নিয়মের বিষয়। সঠিক ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং ইতিবাচক মানসিকতা,  এই চারটি বিষয় মেনে চললেই আপনি ধীরে ধীরে সুস্থভাবে ওজন কমাতে পারবেন। মনে রাখবেন, সুস্থ শরীরই আসল সৌন্দর্য। ওজন কমানোর লক্ষ্য যেন কখনোই নিজের শরীরকে কষ্ট দেওয়া না হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url